অক্টোবর ৫, ২০২৪ ৭:৪১ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩ জন দালাল আটক

ছয় দিনের মাথায় আবারও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের (৩৩ নম্বর) সামনে থেকে তিনজন দালালকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট এলাকার এবাউদুল হকের ছেলে সোহেল রানা (২৪), একই জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ইফতেখার আহমেদের ছেলে ইমতিয়াজ আহমেদ (২১) এবং চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার বাসিন্দা মো. আইয়ুবের ছেলে মো. ইমন (২৪)।
পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে তারা কমিশনের লোভে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনিস্টক সেন্টারে নিয়ে যেত। সেখানে তারা রোগীদের পরীক্ষা নিরিক্ষা এবং নির্দিষ্ট ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনতে বাধ্য করাসহ নানা কার্যক্রমে জড়িত। তাদের কারণে রোগী ও তাদের স্বজনেরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এমনকি দালালদের খপ্পরে পড়ে রোগী ও তাদের স্বজনরা সর্বস্বান্ত হওয়ার ঘটনা অহরহ।
অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা, হাসপাতালের আশপাশে গড়ে ওঠা বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকেরা এই দালাল চক্র গড়ে তুলেছেন। চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম আশেক জানান, আজ (মঙ্গলবার) সকালের দিকে হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের সামনে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে তিন দালালকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঁচলাইশ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, দালালদের উৎপাত বন্ধের লক্ষ্যে যথেষ্ট তৎপরতা চলছে। সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামরার মাধ্যমে হাসপাতাল এলাকা মনিটরিং করা হচ্ছে। পুরো হাসপাতালে পুলিশ ও আনসার বাহিনীর মাধ্যমে দালাল উৎপাত নিয়ন্ত্রণে কাজ চলছে। ইতিমধ্যে অনেক দালালকে আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানায়। এর আগেও গত ১৪ ডিসেম্বর সকালে চমেক হাসপাতালের ৩৩ নং গাইনি ওয়ার্ড থেকে মো. সাহাব উদ্দিন (২৮) নামে এক দালালকে আটক করেছেন পুলিশ সদস্যরা।আটককৃত ব্যক্তি সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করছিল। সে নানাভাবে রোগীদের হয়রানি করতো বলে জানায় পুলিশ। আটক সাহাবউদ্দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার ধামসার গ্রামের মিয়াবাড়ির জাহের মিয়ার ছেলে।
একইভাবে গত ১৭ অক্টোবর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ড থেকে দুই দালালকে আটক করা হয়েছে। আটক দুই ব্যক্তি হলেন, চন্দনাইশ উপজেলার দক্ষিণ হারলা আমির আলীর বাড়ির নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. মইন উদ্দিন (৩২)। তিনি ন্যাশনাল ফার্মেসির কর্মচারী। অন্যজন বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল তালুকদার বাড়ির মিলন দে’র ছেলে রয়েল দে (২৭)। তিনি সিকদার ফার্মেসির কর্মচারী।
এছাড়া গত ২২ সেপ্টেম্বর গাইনি ওয়ার্ড থেকে এসি চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় মিলনসহ দুজনকে আটক করে পুলিশ। পরে পুলিশের জিজ্ঞেসবাদে তারা এসি চুরির কথা স্বীকার করেন। মিলন জানান, হাসপাতালের কর্মচারি খালেদা বেগমের কথায় বাইরে থেকে আসা এক লোককে এসি নিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছিলেন তিনি। এসি কোথায় এবং কেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তার কিছুই জানতেন না মিলন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, হাসপাতালকে দালালমুক্ত করার লক্ষ্যে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে আমরা ‘কুইক রেসপন্স টিম’ গঠন করেছি। আর সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক হাসপাতালের কার্যক্রম মনিটরিং করা যাচ্ছে। যারা রোগীদের চিকিৎসা সেবায় হয়রানি কিংবা বাধাগ্রস্ত করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক