২০১৭ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ রেলওয়ের রোলিং স্টক অপারেশন উন্নয়ন প্রকল্পটি গ্রহণ করা হলেও সেটিও নির্ধারিত সময় চলতি সালের জুনের মধ্যে শেষ হয়নি। দুই বছর মেয়াদ বাড়ানো প্রকল্পটির ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ২০১৮ সালে শুরু হওয়া রেলওয়ের খুলনা-দর্শনা জংশন সেকসনে ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি চলতি সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এ প্রকল্পের অগ্রগতি গত নভেম্বর মাস পর্যন্ত শূন্য। ২০১৮ সালে ভারতের সাথে রেল সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে চিলাহাটি এবং চিলাহাটি বর্ডারের মধ্যে ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়। ২০২৩ সালের জুনে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি ৫৯ শতাংশ। ২০১৮ সালে গ্রহণ করা বগুড়া হতে শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি ২০২৩ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। মেয়াদ এক বছর থাকলেও এ প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ৫ শতাংশ। বাংলাদেশ রেলওয়ের ১০০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ পুনর্বাসন প্রকল্পের ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ। প্রকল্পের মেয়াদ ছয় মাস থাকলেও ৪৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
সমীক্ষা প্রকল্পেও ধীরগতি : ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে চট্টগ্রাম পতেঙ্গার বে-টার্মিনাল রেলওয়ে সংযোগ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০২২ সালের জুনে প্রকল্প কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এক বছর সময় বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ৪৮ শতাংশ। ২০১৯ সালে সুনামগঞ্জ জেলা সদরে রেলওয়ে সংযোগের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং বিশদ ডিজাইন প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেষ হয়নি। পরে একবছর মেয়াদ বাড়ানো এ প্রকল্পটির অগ্রগতি ৪৯ শতাংশ। গোবরা হতে পিরোজপুর পর্যন্ত ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ এবং বাগেরহাট রেলসংযোগ স্থাপনের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই ও বিশদ ডিজাইন প্রকল্পটি ২০১৯ সালে হাতে নেয়া হয়। ২০২১ সালের মধ্যে প্রকল্প কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও চলতি বছর পর্যন্ত প্রকল্পটির অগ্রগতি মাত্র ২০শতাংশ।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের এক প্রকৌশলী বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে বেশিরভাগ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এসব প্রকল্প শেষ হলে রেলে দৃশ্যমান উন্নয়ন চোখে পড়বে। বরাদ্দ না পেলে প্রকল্প এগিয়ে নেয়া কঠিন। ঠিকাদাররাও টাকা না পেলে কাজ এগিয়ে নিতে চায় না।
গত বছরের আগস্ট মাসে রেলওয়ের প্রকল্পে ধীরগতি নিয়ে রেলমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভায় ক্ষোভ জানানো হয়েছিল। সেসময় প্রকল্পে ধীরগতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল। সেই বৈঠকে করোনা ছাড়াও জমি অধিগ্রহণসহ নানা কারণে প্রকল্পের কাজে ধীরগতি হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। এজন্য অতিরিক্ত লোকবল যুক্ত করে নানা কৌশলে কাজের গতি বাড়ানোর কথা জানিয়েছিলেন মন্ত্রী।