দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ডামাডোল কড়া নাড়ছে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ‘২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ কিংবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেখতে দেখতে ভোটের সময় এগিয়ে আসছে। তাই প্রাথমিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে চট্টগ্রামে সংসদীয় এলাকা গুলোতে ভোট কেন্দ্রের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কর্মকর্তারা। এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোন নির্দেশনা না আসলেও প্রাথমিক প্রাক–প্রস্তুতি শুরু করেছে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক ও জেলা নির্বাচন অফিস।
জেলা পর্যায়ে জাতীয় নির্বাচনের আগের ভোট কেন্দ্র গুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করে তার একটি সঠিক তালিকা তৈরি করে জেলা অফিসে পাঠানোর জন্য উপজেলা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ‘আগে যে সব স্থানে ভোট কেন্দ্র ছিল– সেসব স্থানে ভোট কেন্দ্র গুলো আছে কিনা। আগে যেখানে ভোট কেন্দ্র ছিল–সেখানে ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ আছে কিনা। কোথাও কোন বিল্ডিং ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। ভোটার বেড়েছে কিনা। আগের সম্ভাব্য ভোট কেন্দ্র গুলো পরিদর্শন করে একটি তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস থেকে জানা যায়, চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে মোট ১৬টি সংসদীয় আসন রয়েছে। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৮৯৮টি। আর বুথের সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৬৮৩টি। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে ১৫ উপজেলায় ৫৮টি ভোট কেন্দ্র ও ৮১৬টি ভোট কক্ষ বেড়েছিল। ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি, বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্নজনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভোট কেন্দ্র বৃদ্ধি করা হয়েছিল বলে জানান জেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা। এবারও ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে কেন্দ্র সংখ্যা বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা। ইতোমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি উল্লেখ করেছিলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ‘২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ কিংবা ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন। সিইসি বলেন, বর্তমান সরকার যে তারিখে প্রথম সভা করেছিল, সে অনুযায়ী ২০২৪ সালের জানুযারির প্রথম সপ্তাহে অথবা ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষের দিকে নির্বাচনে যেতে হবে। নির্বাচনটা একটা জটিল কর্মযজ্ঞ। অনেক প্রস্তুতি, সমঝোতার প্রয়োজন হয়। আমাদের তরফ থেকে প্রস্তুতিগুলো নিচ্ছি। আইনে যে সক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, কিছু এখতিয়ার আমাদের আছে। আচরণ বিধিমালা, পরিচালনা বিধিমালা অনুযায়ী কাজ করবো।
চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী আবুল খায়ের জানান, জাতীয় নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতির এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। তারপরও আমাদের পক্ষ থেকে সংসদীয় আসন গুলোর খসড়া ভোটার তালিকা তৈরি করে আমাদের জেলা নির্বাচন অফিসে পাঠানোর জন্য উপজেলা পর্যায়ে বলা হয়েছে। উপজেলা থেকে আস্তে আস্তে খসড়া তালিকা আসতে শুরু করেছে। এখনো সব গুলো আসেনি। প্রত্যেক উপজেলা থেকে তালিকা আসার পর আমরা জেলা নির্বাচন অফিস থেকে খসড়া ভোট কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করবো। এরপর আপত্তি শুনানি শেষে চূড়ান্ত হবে।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলীয় জোট এবং প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি দল গুছিয়ে নির্বাচনমুখী হয়ে উঠেছে। এদিকে বিএনপি আন্দোলনমুখী হয়ে উঠলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে যেতে পারে।