ডিসেম্বর ৩, ২০২৪ ৪:৪৮ অপরাহ্ণ

দখলদারদের আখড়া কল্পলোক আবাসিক

দখলদারদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কল্পলোক আবাসিক বাজার। আবাসিকে পরিকল্পিত ‘কাঁচাবাজার’ করার জন্য সংরক্ষিত জায়গার পুরোটাই এখন অবৈধ দখলে চলে গেছে। সিন্ডিকেটের দখলে চলে গেছে খালি প্লটও। অবশ্য সিডিএ বলছে দ্রুত উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হবে কল্পলোক আবাসিকে। তাছাড়া সেখানে কিচেন মার্কেট করার একটি প্রকল্প নিচ্ছে সংস্থাটি।
কল্পলোক আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেখানে সিডিএ’র একটি পরিকল্পিত বাজার গড়ে তোলার কথা থাকলেও সেটা এখনো শুরু হয়নি। যার কারণে খালি প্লট দখল করে দোকান গড়েছে একটি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের অধীনে পুরো আবাসিকে ভ্রাম্যমাণ দোকানও রয়েছে। এক ও দুই নম্বর রোডের ওপর গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক ঝুপড়ি ঘর। রাত-দিন সেখানে চলে বখাটেদের আড্ডা। চলে মাদক সেবনও। অবৈধ স্থাপনার কারণে ৪০ ফুটের রোড এখন ২৫ ফুটে দাঁড়িয়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। নালা দখল করে বসতি গড়ায় বৃষ্টি হলে পানি চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। দখলদাররা আবার যেখানে সেখানে বসায় ভ্রাম্যমাণ দোকান। ভবন মালিক বাধা দিলে উল্টো হুমকি দেয়। আবার কোথাও প্লট দখল করে বালি আর ইটের ব্যবসা গড়ে তুলেছে দখলদাররা। অবৈধ দোকানগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগসহ নানা সুবিধা দেয়া হচ্ছে। প্রায় সময় দখলদারদের দাপটে প্লট ও ফ্ল্যাট মালিকদের অসহায় ও ভীত অবস্থায় থাকতে হচ্ছে। সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস চট্রলার কণ্ঠকে বলেন, কল্পলোক আবাসিকে কাঁচাবাজারের জন্য জায়গা রাখা আছে। সেখানে অবৈধ দোকান বসানো হয়েছে বলে শুনেছি। আমরা উচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছি। শিঘ্রই সেখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। আমরা সেখানে কিচেন মার্কেট করার একটি প্রকল্প নিব। নিচে বাজার হবে, উপরে বাণিজ্যিক ফ্ল্যাট হবে। প্রকল্প প্রস্তুত করার কাজ চলমান আছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, আবাসিকের বাসিন্দাদের জন্য রাখা ২৪ কাঠার পুরো কাঁচাবাজার চলে গেছে অবৈধ দখলে। গড়ে উঠেছে ঝুপড়ি, টিনশেড ঘর ও বেড়া দিয়ে তৈরি নানা স্থাপনা। রাস্তা ও প্লট দখল করে চলছে বালি ও ইটের ব্যবসা। আবাসিকের কাঁচাবাজার, এক ও দুই নম্বর রোড এবং খালি প্লট সবই এখন অবৈধ দখলে। পুরো আবাসিকে চলছে দখলদারদের দাপট। অথচ বেহাত হয়ে যাওয়া জায়গায় আবাসিকের বাসিন্দাদের জন্য কাঁচাবাজার স্থাপনের কথা ছিল। ৪শ ভবনের ৩০ হাজারের বেশি বাসিন্দা এখন বাধ্য হয়ে দুই তিন কিলোমিটার দূরে কালামিয়া বাজার ও বহদ্দারহাটে গিয়ে বাজার করেন।
কল্পলোক আবাসিক প্লট ও ফ্ল্যাট মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সফিকুল আলম চট্টলার কণ্ঠকে জানান, দখলদারদের বার বার সরিয়ে যেতে বললেও তারা সরছে না। উল্টো ভবন মালিকেদের নানা প্রকারের হুমকি দেয়। বাসিন্দাদের বাজার করতে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। উচ্ছেদের দায়িত্ব চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) হলেও তারা নিরব। কোনো পদক্ষেপ নেয় না। দ্রুত সিডিএ’র পরিকল্পিত বাজার চালুর মাধ্যমে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের দাবি জানান এলাকাবাসী।
কল্পলোক আবাসিক সমাজ কল্যাণ সমিতির সভাপতি জানে আলম এই প্রতিবেদককে বলেন, কাঁচাবাজারের জন্য সিডিএ যে জায়গা রেখেছিল তার অনেকটা থানার জন্য দিয়ে দিয়েছে। এখন সামান্য কিছু জায়গা পড়ে আছে। তবে অবৈধ যে বাজার গড়ে উঠেছে তাতে বাসিন্দাদের কিছুটা সুবিধাও হচ্ছে। বাজার না থাকলে দূরে গিয়ে বাজার করতে হবে। সিডিএ বাজার স্থাপন করলে এসব বাজার উঠে যাবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক