ডিসেম্বর ৪, ২০২৪ ৮:০২ পূর্বাহ্ণ

টেকনাফ হতে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ৬০০ যাত্রী নিয়ে পর্যটকবাহী ২ জাহাজ

দীর্ঘ ১০ মাস বন্ধ থাকার পর টেকনাফ হতে সেন্টমার্টিন এর উদ্দেশ্যে দুটি জাহাজ যাত্রা শুরু  করে জাহাজ দুটি কিছুক্ষণ আগে(১২টায়) সেন্টমার্টিনে পৌঁছেছে।  এর আগে বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) মৌসুমের তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) এই রুট থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে পরীক্ষামূলকভাবে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের চলাচলের অনুমোদন দেয় প্রশাসন। সর্বশেষ গত ৩১ মার্চ টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করেছিল।

Nagad

শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল সোয়া ৯টার দিকে টেকনাফ দমদমিয়া ঘাট থেকে জাহাজ দুটি রওয়ানা দেন। এর আগে পর্যটকরা ঘাটে পৌঁছালে স্বাগত জানান টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান।

সরেজমিনে দেখা যায়, টেকনাফ দমদমিয়া পর্যটকবাহী জাহাজের জেটিঘাটে টিকিটের জন্য ভিড় করেন ভ্রমণে আসা পর্যটকরা। পর্যটকরা টেকনাফ পৌঁছার পথে সড়কের বেহাল অবস্থা তুলে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা জানান, শতাধিক পর্যটক টিকিট না পাওয়ায় দ্বীপে ভ্রমণে যেতে পারেননি।

জাহাজ মালিক সমিতি স্কোয়াব’র সভাপতি তোফায়েল আহমদ এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ায় আজ শুক্রবার প্রথম দিন এমবি পারিজাত ও রাজহংস নামের দুটি জাহাজ দমদমিয়া ঘাট থেকে ৬০০ পর্যটক নিয়ে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। পরশু থেকে কেয়ারি সিন্দাবাদসহ অনুমতি পাওয়া অন্যান্য জাহাজগুলো চলাচল করবে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো পর্যটকদের উন্নতমানের সেবা দিতে। তবে এবার তেল থেকে শুরু করে সবকিছুর দাম বাড়তি হওয়ায় টিকিটের দাম একটু বাড়ানো হয়েছে।

ঢাকার ধানমন্ডি থেকে আসা আবদুল হক চট্টলার কণ্ঠকে  বলেন, ‘কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছিলাম। জাহাজ সংকটের কারণে সেন্টমার্টিন ভ্রমণের লক্ষ্য ছিলো না। কিন্তু হঠাৎ করে টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচল হওয়ায় রাতেই তড়িঘড়ি করে টিকেট কেটে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে স্বপ্নের দ্বীপ সেন্টমার্টিন যাচ্ছি। খুবই ভালো লাগছে।’

ফেনি থেকে আসা হাসিবুর রহমান বলেন, ‘আগে জানতাম এই রুটে জাহাজ বন্ধ। কাল রাতেই জানতে পারলাম আবার খুলে দেওয়া হয়েছে। তাই আর দেরি করলাম না। রাতেই রওয়ানা দিয়ে দেই। আর এখন নাফ নদী অপরুপ মোহনা ও দুপাশের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে সেন্টমার্টিন যাবো।’

আরেক পর্যটক সাদিয়া কানিজ বলেন, সেন্টমার্টিন কখনোও যাওয়া হয়নি। ডিসেম্বরে যাওয়অর প্লান করেছিলঅম কিন্তু টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচল না করায় একটু দেরি হল। তারপরও নতুন বছরেই ইচ্ছে পূরণ হচ্ছে সেটাই অনেক আনন্দের।’

কক্সবাজারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু সুফিয়ান চট্টলার কণ্ঠকে জানান,  শুক্রবার প্রথম দিন দুটি জাহাজ চলাচল শুরু করেছে। পরীক্ষামূলকভাবে দুইটি জাহাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আজ সকালে এমভি পারিজাত ও এমভি রাজহংস ৬০০ জন যাত্রী নিয়ে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে রওনা দিয়েছে। এই দুইটি জাহাজ চলাচলে পরিস্থিতি ইতিবাচক পেলে পরদিন থেকে চলাচলের জন্য অন্যান্য জাহাজগুলোকে অনুমতি দেওয়া হবে।

অনেক পরে হলেও জাহাজ চলাচলে অনুমতি পাওয়ায় অত্যন্ত খুশি হয়েছেন ট্যুর অপারেটরসহ সংশ্লিষ্টরা। এই জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তারা। সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে পর্যটক সেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।

প্রসঙ্গত, নাফ নদীর নাব্যতা-সংকট ও নদীতে একাধিক বালুচর জেগে ওঠার কথা উল্লেখ করে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারে আয়োজিত এক সেমিনারে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে বলে তিনি জানিয়েছিলেন।

কিন্তু কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, বে-ওয়ান ও বার আউলিয়া নামের তিনটি জাহাজ চলাচল করে। এই তিন জাহাজে পর্যটক হয়রানি সীমা ছাড়িয়ে যায়। অভিযোগ উঠে, এই তিন জাহাজের সংশ্লিষ্টরা ষড়যন্ত্র করে নাব্যতা সংকটের অজুহাত তুলে টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচল করতে দেয়নি।

এদিকে, পর্যটনের ভরা মৌসুমের তিন মাসের বেশি সময় ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ বন্ধ রয়েছে। জাহাজ চলাচলের বিষয় কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় দ্বীপে বসবাসরত স্থানীয় বাসিন্দাসহ হোটেল-রেস্টুরেন্ট মালিক ও এ রুটে পর্যটকবাহী জাহাজে দায়িত্বরতদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক