ডিসেম্বর ৪, ২০২৪ ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ

শ্রীলঙ্কায় বিক্ষোভকারীরা চুপ হয়ে যাওয়ার কারণ

চট্টলার কণ্ঠ, নিউজ।  স্বাধীনতার পর শ্রীলঙ্কা এই প্রথম সবচেয়ে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়ে। এই সংকটের জেরে দেশটিতে কয়েক মাস তুমুল বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভ সত্ত্বেও সংকটের সমাধান হয়নি। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা এখন আর সড়কে নেই। শ্রীলঙ্কার বিক্ষোভকারীরা কেন নিশ্চুপ হয়ে গেলেন, এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজ করেছেন বিবিসির স্যাম ক্যাব্রাল।
বড়দিন ও নতুন বছর উপলক্ষে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় সরকারি ব্যবস্থাপনায় সাজসজ্জা করা হয়েছিল। যে স্থানে এই আয়োজন করা হয়, মাস কয়েক আগে তা ছিল বিক্ষোভের অন্যতম কেন্দ্র।

স্থানীয় অনেকেই এই সাজসজ্জার বিষয়ে তীব্র হতাশা প্রকাশ করেন। তাঁরা বলেন, শ্রীলঙ্কার বর্তমান যে অবস্থা, তাতে এমন ঘটা করে উৎসব উদ্‌যাপনের কোনো মানে হয় না।

অর্থনৈতিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রীলঙ্কায় গত বছরের এপ্রিলে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে দেশটিতে রাজনৈতিক সংকটও দেখা দেয়।

এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা দেশটির রাজপথসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা দখলে নিয়ে আন্দোলন করেন। তাঁরা দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতাদের পদত্যাগ দাবি করেন।

বিক্ষোভের মুখে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে গত ১৩ জুলাই শ্রীলঙ্কা থেকে পালিয়ে যান। পরে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন।
গোতাবায়া ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। পরে তিনি পার্লামেন্টে ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

রনিল বিক্ষোভ দমাতে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেন। তাঁর নির্দেশে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী দেশটির বিভিন্ন সরকারি ভবন বিক্ষোভকারীদের কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করে। নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভস্থলে অভিযান চালায়। বিক্ষোভকারীদের তাঁবু ভেঙে দেয়। অনেক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। বিদ্যুৎ, খাদ্যসহ অন্যান্য সংকট বেড়েছে। এর মধ্যে কর বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে জনগণের ওপর চাপ আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে কলম্বোয় উৎসবের আয়োজনকে ‘জঘন্য’ বলে অভিহিত করেন দেশটির বাসিন্দা স্বস্তিকা অরুলিঙ্গম। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে শ্রীলঙ্কায় একধরনের ছদ্মস্থিতিশীলতা আছে। কিন্তু দেশের মানুষের জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়েছে। তাঁরা প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছেন।

শ্রীলঙ্কার মানুষ মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে থাকলেও তাঁরা প্রতিবাদ দেখাতে পারছেন না। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় মানবাধিকারকর্মী শ্রীন সরুর বলেন, শ্রীলঙ্কায় এখন যেকোনো ধরনের প্রতিবাদ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক