কাঁচামাল সংকটে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আবারো বন্ধ রাখা হয়েছে কিডনি ডায়ালাইসিস সেবা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে কার্যক্রম বন্ধ রাখে ডায়ালাইসিস সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান স্যানডোর। এর আগে চলতি মাসের ৪ তারিখ একইভাবে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ রেখেছিল প্রতিষ্ঠানটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে চমেকে কিডনী ডায়ালাইসিস সেন্টারের সামনে সেবা বন্ধের একটি নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছে স্যানডোর কর্তৃপক্ষ। এতে উল্লেখ করা হয়, গত নভেম্বর ২০২২ থেকে অনেক কাঁচামাল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান আংশিক এবং কেউ কেউ পূর্ণাঙ্গ সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বন্ধ করে নগদ মালামাল ক্রয় করে ডায়ালাইসিস সেবা চালু রাখলেও বর্তমানে আমাদের হাতে যথেষ্ট পরিমাণ নগদ অর্থ না থাকার কারণে মালামাল ক্রয় কোনো প্রকারেই সম্ভব হচ্ছে না। এমন অবস্থায় ডায়ালাইসিসের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল স্বল্পতায় আগামি দু-একদিনের মধ্যে সেবা বিঘিœত হতে পারে। যেহেতু ডায়ালাইসিস সেবা অত্যন্ত স্পর্শকাতর জরুরি সেবা, সেহেতু সংশ্লিষ্ট সকল রোগীদের বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অগ্রিম অনুরোধ করা হলো। বিগত বছরগুলোতে স্যানডোরের সেবার বিপরীতে ৩১ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।স্যানডোর সিনিয়র এক্সিকিউটিভ খালেদ সাইফুল্লাহ জানান, কিছু কাঁচামাল সংকটে সাময়িকভাবে সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। সকালের সেশনেও আমাদের সেবা চলছিল। সকালের সেশনে রোগীদের কাছ থেকে যে ফি নেওয়া হয়েছে সে টাকা দিয়ে সংকট থাকা মেডিসিনগুলো কিনতে পাঠিয়েছি। আমরা সাধারণ ভেন্ডর নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ডায়ালাইসিসের কাঁচামালগুলো কিনে থাকি। কিন্তু প্রচুর অর্থ বকেয়া থাকায় তারা মেডিসিন দিচ্ছে না। তাই সেবা দিতে আমাদের সমস্যা হচ্ছে।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান চট্টলার কণ্ঠকে জানান, কিডনি রোগীদের সেবা দিতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এরই মধ্যে আগের নিয়মে রোগীদের কাছ থেকে ফি নেওয়া হচ্ছে। টেকনিক্যাল কারণে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ থাকলেও শীঘ্রই সেবা চালু করা হবে।
এর আগে গত বছরের ৪ জানুয়ারি এভাবে নোটিশ টাঙিয়ে সেবা বন্ধ করে দেয় স্যানডর। এক বছর পর আবারও একই পদ্ধতিতে নোটিশ ঝুলছে সেখানে।
এদিকে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন ডায়ালাইসিস রোগীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় সেশন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ১ টায় শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। তাদের দাবি, গত বছরের মতো একই পদ্ধতি অনুসরণ করে বকেয়া আদায়ের চেষ্টা করছেন তারা।