সূত্র জানিয়েছে, উন্নত বিশ্বের আদলে রাজধানী ঢাকায় মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নের এক পর্যায়ে চট্টগ্রামেও মেট্রোরেল চালু করার বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। এই ব্যাপারে কোইকা প্রকল্পটির ফিজিবিলিটি স্টাডি করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কোরিয়ান কোম্পানির আগ্রহের দিনকয়েক পরই চীনা কোম্পানি চায়না কনস্ট্রাকশন কোম্পানি বা সিসিসিও প্রকল্পটি নিয়ে ফিজিবিলিটি স্টাডি করার আগ্রহসহ বেশ কিছু প্রস্তাব দাখিল করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোইকাকে চট্টগ্রামের মেট্রোরেল প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি করার দায়িত্ব দেয়া হয়। ‘ট্রান্সপোর্ট মাস্টারপ্ল্যান অ্যান্ড প্রিলিমিনারি ফিজিবিলিটি স্টাডি ফর আরবান মেট্রোরেল ট্রানজিট কন্সট্রাকশন অব চিটাগাং মেট্রোপলিটন এরিয়া’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হচ্ছে ৭০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সহায়তা থেকে ৫৭ কোটি টাকা পাওয়া যাচ্ছে। গত ২২ নভেম্বর প্রকল্পটি একনেকের অনুমোদন লাভ করে। ওই সময় বলা হয় যে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম মহানগরীতে যানজট হ্রাস এবং জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হবে। পরিবেশবান্ধব মেট্রো সিস্টেম চালু করার মাধ্যমে নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এতে শহর এবং উপশহরের পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। ফিজিবিলিটি স্টাডিতে ব্যয় হওয়া ৭০ কোটি ৬৩ লাখ টাকার মাঝে প্রকল্পের মূল কার্যক্রমে ৫৭ কোটি টাকার পরামর্শক সেবা (মাস্টারপ্ল্যান এবং প্রাক সম্ভব্যতা সমীক্ষা), ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকার পরামর্শক সেবা (প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন), ২ কোটি ২৯ লাখ টাকার আউটসোর্সিং, ১ কোটি টাকার কারিগরি পরামর্শক, এক কোটি টাকার পরিবহন পরামর্শক এবং ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার গাড়িভাড়া বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে।
আজ সকাল ১১টায় নগরীর রেডিসন ব্লু চিটাগাং বে ভিউতে প্রকল্পটির কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এতে প্রধান অতিথি থাকবেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এমপি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি, বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত মি. লি জ্যাং কিউন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্ল্যাহ নুরী এতে সভাপতিত্ব করবেন।
এদিকে ফিজিবিলিটি স্টাডি কার্যক্রমের সাথে জড়িত কোরিয়ান কোম্পানি কোইকা গতকাল সিডিএ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জহিরুল আলম দোভাষের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। তারা প্রকল্পটির ভবিষ্যতের ব্যাপারে অনেক বেশি আশাবাদী বলে উল্লেখ করে বলেন, চট্টগ্রামে দিনে দিনে জনসংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে শহরের আয়তন। মীরসরাই ইকোনমিক জোন কিংবা টানেল চালু হওয়ার পর দক্ষিণ চট্টগ্রামে যেভাবে শহর বিকশিত হবে তাতে মেট্রোরেল প্রকল্প অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। আগামীর শহরকে বাসযোগ্য রাখতে মেট্রোরেল চালুর এই আগাম প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।