নিজস্ব প্রতিবেদ।
পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রায় হামলার হুমকি দিয়ে লেখা একটি চিরকুট পাওয়া গেছে রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে।
এ ঘটনায় মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজক কমিটির অর্থ ও নিরাপত্তা বিষয়ক সদস্য আবতাহী রহমান শাহবাগ থানায় একটি জিডি করেছেন।
জিডিটি তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া শাহবাগ থানার এসআই মো. আল-আমীন বলেন, “মঙ্গলবার রাতে মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজক কমিটির এক সদস্য একটি চিরকুট পেয়েছেন জানিয়ে জিডির আবেদন করেন। আমরা আবেদনটি গ্রহণ করেছি এবং বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
আবতাহী রহমান জিডিতে বলেছেন, ১১ এপ্রিল রাত ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে চারুকলার পশ্চিম পাশের দেয়ালে রঙের কাজ তদারকি করার সময় প্লাস্টিক চেয়ারের উপর একটি সাদা কাগজ ও ৫০ টাকার নোট পান তিনি। ওই কাগজে লেখা ছিল ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা কাজটা শিরকের, এখানে এসে ক্ষতি করো না তোমাদের, হামলা হতে পারে এনিটাইম ঐ দিনের, দাজ্জালী বাহিনী পাবে না টের মোদের।’
পরে এ বিষয়ে চারুকলা অনুষদের প্রক্টরিয়াল টিমের সঙ্গে আলোচনা করে জিডি করার সিদ্ধান্ত হয়ে বলে জানান তিনি।
গত শতকের আশির দশকে সামরিক শাসনের অর্গল ভাঙার আহ্বানে পহেলা বৈশাখে চারুকলা থেকে যে শোভাযাত্রা বের হয়েছিল সেটিই পরে মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম নেয়। ২০১৬ সালে ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতিও পায় এ কর্মসূচি।
রাজধানীতে বর্ষবরণ আয়োজনের অন্যতম প্রধান অনুসঙ্গ হয়ে ওঠা এই শোভাযাত্রা আয়োজনের মূল ভূমিকায় থাকেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাবেকরা। মাসখানেক আগে থেকেই শুরু হয় তাদের প্রস্তুতি।
এবার এই মঙ্গল শোভাযাত্রা বন্ধে উকিল নোটিস পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনা হচ্ছে।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকার জেলা প্রশাসক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিনকে গত ৯ এপ্রিল ওই নোটিস পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।
সেখানে বলা হয়, মঙ্গল শোভাযাত্রার সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের ‘দৈত্য আকৃতির’ পাখি, মাছ ও বিভিন্ন প্রাণীর ভাস্কর্য প্রদর্শনের মাধ্যমে ‘মুসলিম জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হচ্ছে’।