চট্টলার কণ্ঠ নিউজ ডেস্ক।
বিএনপির সমাবেশে হাতাহাতির ঘটনার জের ধরে নগর মহিলা দলের চার নেত্রীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃতরা হচ্ছেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও নগর মহিলা দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফাতেমা বাদশা, নগর মহিলা দলের সহসভাপতি জেসমিনা খানম ও আঁখি সুলতানা এবং সাংগঠনিক সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদা আক্তার লিটা।
গতকাল রোববার মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আফরোজা আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ স্বাক্ষরে পৃথক বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়। এতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে মহিলা দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করে বহিষ্কার করা হলো।
বহিষ্কারাদেশের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে দেওয়ান মাহমুদা আক্তার লিটা আজাদীকে বলেন, সেদিন (বিএনপির সমাবেশে) কী হয়েছে সবাই দেখেছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, মনোয়ারা বেগম মনি (নগর মহিলা দলের সভাপতি) আমাদের বাধা দিয়েছেন। আমাদের ওপর হামলা করেছেন। এরপরও আমাদের বহিষ্কার করা হলো। কেন্দ্র চাইলে এ ঘটনা তদন্ত করতে পারত। তদন্তে আমরা দোষী সাব্যস্ত হলে বহিষ্কারসহ যে কোনো শাস্তি মেনে নিতে আপত্তি ছিল না। এরপরও দলের যে কোনো কর্মসূচিতে অংশ নেব।
তিনি বলেন, দুটি আইসিটিসহ সাতটি রাজনৈতিক মামলা রয়েছে আমার বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থাকায় আসামি হতে হলো। দল থেকে বহিষ্কার করে কী প্রতিদান দিয়েছেন আমাদের কেন্দ্রীয় নেত্রী? দলের মতো মামলা থেকেও কি অব্যাহতি দিতে পারবেন?
বহিষ্কারের নেপথ্যে : গত শুক্রবার নাসিমন ভবন দলীয় কার্যালয়ের সামনে নূর আহমেদ সড়কে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির জনসমাবেশ হয়। এতে হাতাহাতিতে জড়ান মনোয়ারা বেগম মনি ও ফতেমা বাদশার অনুসারীরা। হাতাহাতিতে দুই গ্রুপের মাঝখানে পড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন ফাতেমা বাদশা। ঘটনার পর আঁখি সুলতানা দাবি করেন, মিছিল নিয়ে সমাবেশে প্রবেশ করার সময় মনোয়ারা বেগম মনি বাধা দেন এবং হামলা করেন। তবে মনোয়ারা বেগম মনি তা অস্বীকার করেন।
মহিলা দল সূত্রে জানা গেছে, হাতাহাতির ঘটনার আগে থেকেই মহিলা দলে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধ শুরু হয় ৩০ মার্চ পুরনো দুই নেতৃত্ব বহাল রেখে অর্থাৎ টানা তৃতীয়বারের মতো মনোয়ারা বেগম মনিকে সভাপতি ও জেলী চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৩৬ সদস্যের নগর মহিলা দলের কমিটি ঘোষণার পর। ওইদিন নতুন নেতৃত্ব না আসার প্রতিবাদে জেসমিনা খানম, আঁখি সুলতানা ও দেওয়ান মাহমুদা আক্তার লিটাসহ ১৩ জন পদত্যাগ করেন। একদিন পর সংবাদ সম্মেলন করে কমিটি বাতিলের দাবি করেন তারা। এরপর ৬ এপ্রিল চার নেত্রীকে শোকজ করে কেন্দ্র। শোকজের ‘সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারায়’ গত ২৬ এপ্রিল তাদের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ স্থগিত করে কেন্দ্র। এরপরও নগর মহিলা দলের কমিটি বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছিলেন তারা। সর্বশেষ হাতাহাতিতে জড়িয়ে বহিষ্কার হন দল থেকে।