ডিসেম্বর ৪, ২০২৪ ৯:০৭ পূর্বাহ্ণ

“অশান্ত তাপদাহে “আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে শান্তর সেঞ্চুরি

চট্টলার কণ্ঠ নিউজ।

প্রথমে সাকিব আল হাসান এবং পরে তামিম ইকবাল। এ দু’জনের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশ টেস্ট দল কেমন করবে তা নিয়ে কিছুটা শঙ্কা থাকলেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন স্বস্তিতে কাটিয়েছে স্বাগতিকরা। নাজমুল হোসেন শান্ত আর মাহমুদুল হাসান জয়ের দুইশোর্ধ্ব জুটি বড় রানের ভিত গড়ে দেয়। টেস্টের প্রথম দুই সেশনে আফগান বোলারদের ওপর ছড়ি ঘোরায় বাংলাদেশের ব্যাটাররা। এরপর তৃতীয় সেশনে এসে দ্রুত কয়েকটি উইকেট তুলে নিয়ে লড়াইয়ে ফেরে আফগানিস্তান। তবে শেষ বিকেলে আরেকটি জুটি দাঁড় করিয়ে ফেলেন মুশফিকুর রহিম আর মেহেদি হাসান মিরাজ।

মুশফিক–মিরাজ জুটি যোগ করেন ৭২ রান। ৫ উইকেটে ৩৬২ রান নিয়ে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। মুশফিক ৪১ আর মিরাজ ৪৩ রানে অপরাজিত আছেন। মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের একমাত্র টেস্টে টস জিতে বাংলাদেশকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান আফগান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদি। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় টাইগাররা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে নিজের প্রথম বলেই উইকেটের দেখা পান আফগানিস্তানের অভিষিক্ত পেসার নিজাত মাসুদ। মাসুদের বেরিয়ে যাওয়া বলে হালকা ব্যাট ছুঁয়ে যায় ওপেনার জাকির হাসানের। আফগান ক্রিকেটারদের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেননি। রিভিউ নেয় সফরকারীরা। রিপ্লেতে দেখা যায়, বল লেগেছে জাকিরের ব্যাটে (১)। দলীয় ৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শুরুতেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ। তবে নাজমুল হোসেন শান্ত ক্রিজে এসে সেই চাপ সরিয়ে দিতে থাকেন। বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে মাহমুদুল হাসান জয়ের সঙ্গে গড়েন দারুণ এক জুটি। চোখ ধাঁধানো সব বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শান্ত চালু রাখেন রানের চাকা। সেই তুলনায় জয় ছিলেন একটু ধীরস্থির। শান্ত তার ফিফটি তোলেন ৫৮ বলে। যার মধ্যে ৪০ রানই আসে বাউন্ডারিতে। পরের ৫০ রান তুলতে অবশ্য খেলেছেন ৬০ বল। বাউন্ডারি হাঁকান আরও ৮টি। মারকুটে খেলে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন ১১৮ বলে। ফিফটি পান তার সঙ্গী জয়ও। তবে তিনি বেশ দেখেশুনে খেলেন। ১০২ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন টাইগার ওপেনার। লেগস্পিনার জহির খানের বলে দুইবার ওভার থ্রো হলে দৌড়ে ৫ রান নেন শান্ত আর জয়। তাতেই ফিফটির ঘরে পা পড়ে জয়ের। যদিও সেঞ্চুরির সুযোগ হাতছাড়া করেছেন ভুলভাল শট খেলে। অবশেষে উইকেটটা জমা দেন ডানহাতি এই ওপেনার। জয়ের আউটে ভাঙে শান্তর সঙ্গে ২৬৭ বলে গড়া ২১২ রানের বড় জুটি। টেস্টে দ্বিতীয় উইকেটে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেরা জুটি।

পার্টটাইম লেগস্পিনার রহমত শাহর বেরিয়ে যাওয়া বলে কাট করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন জয়। ১৩৭ বল খেলে গড়া তার ৭৬ রানের ইনিংসে ছিল ৯টি বাউন্ডারির মার। বাংলাদেশ চা–বিরতিতে যায় ৪৯ ওভারে ২ উইকেটে ২৩৫ রান নিয়ে। বিরতির পর ঘুরে দাঁড়ায় আফগানিস্তান। সাবেক অধিনায়ক মোমিনুল হকের অফফর্ম কাটছেই না। আফগান অভিষিক্ত পেসার নিজাত মাসুদের লেগ সাইডে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট ছুঁইয়ে সাজঘরে ফিরেন মোমিনুল (১৫)। আম্পায়ার অবশ্য শুরুতে আউট দেননি। এবারো রিভিউ নিয়ে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদলায় আফগানরা। মোমিুনলের পর ফিরে যান শতক পাওয়া নাজমুল হোসেন শান্তও। শান্ত আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেললেও এক সময় ধৈর্য্য হারান। আফগান বাঁহাতি স্পিনার আমির হামজার বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন শান্ত। ১৭৫ বলে গড়া শান্তর ১৪৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটিতে ছিল ২৩টি চার আর ২ ছক্কার মার। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে অভিষিক্ত লিটন দাস খুবই দৃষ্টিকটু আউটে সাজঘরে ফেরেন। রিস্ট স্পিনার জহির খানের বলে খোঁচা দিয়ে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন লিটন। ১৫ বলের ইনিংসে একটি ছক্কা হাঁকিয়ে তিনি করেন ৯ রান। ১ উইকেটেই ২১৮ রান তুলে ফেলা বাংলাদেশ পরে ৭২ রান তুলতে হারিয়ে বসে ৪টি উইকেট। শেষ বিকেলে মুশফিক–মিরাজ হাল ধরে স্বস্তি দিয়েছে স্বাগতিকদের।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক