মুসলমানদের অতি পবিত্র এই ভূমিতে যার যার মতো সুবিধাজনক জায়গা বেছে নিয়ে তারা ইবাদত করবেন, হজের খুতবা শুনবেন এবং জোহর ও আসরের নামাজ পড়বেন। জিকির–আসকারে মশগুল থাকবেন। ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা দেওয়া হবে। সৌদি আরব সরকার এবার হজের খুতবার জন্য নতুন খতিব বাছাই করেছেন। তিনি হলেন শায়খ ড. ইউসুফ বিন মুহাম্মদ বিন সাঈদ। তিনি সৌদি আরবের সিনিয়র উলামা কাউন্সিলের সদস্য।
করোনা মহামারির পর এবার সর্বাধিক মুসল্লি পবিত্র হজ পালন করবেন। সৌদি আরবের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বাংলাদেশসহ ১৬০ দেশ থেকে ১৬ লাখ পাঁচ হাজার মুসল্লি হাজির হয়েছেন মক্কায়। এর সঙ্গে সৌদি আরবের আরও চার লাখের বেশি মুসল্লি অংশ নেবেন হজে। নিকট ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গরমও সহ্য করতে হবে এবার হজযাত্রীদের। এই কদিন মিনা ও এর আশপাশের এলাকায় তাপমাত্রা প্রায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া বার্তায় জানানো হয়েছে।
হাজীদের নির্বিঘ্নে হজ পালনের জন্য সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জননিরাপত্তা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ আল বাসামী জানিয়েছেন, দুই লাখ ৩৮ হাজার নিরাপত্তাকর্মী হাজীদের সেবায় প্রস্তুত রয়েছেন।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রী ডা. তৌফিক আল রাবিয়া বলেন, এ বছর ৩২ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী হজযাত্রীদের সেবা দেবেন। গরমসহ নানাবিধ কারণে কোনো হজযাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসা কর্মকর্তা নিয়োজিত রয়েছে। মক্কা, মিনা, আরাফাত ময়দান ও মুজদালিফায় বহু অ্যাম্বুলেন্স, অস্থায়ী চিকিৎসাকেন্দ্র ও হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব এলাকার পথে পথে হাজীদের বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহায়তার জন্য বিভিন্ন ভাষার কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
আজ ১০ জিলহজ মিনায় পৌঁছার পর হাজীদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। প্রথমে মিনাকে ডান দিকে রেখে হাজীরা দাঁড়িয়ে শয়তানকে (জামারা) পাথর নিক্ষেপ করবেন। দ্বিতীয় কাজ আল্লাহর উদ্দেশে পশু কোরবানি করা। অনেকেই মিনায় না পারলে মক্কায় ফিরে গিয়ে পশু কোরবানি দেন। তৃতীয় পর্বে মাথা ন্যাড়া করা। চতুর্থ কাজ তাওয়াফে জিয়ারত। মিনায় রাত যাপন করে জিলহজের ১১ তারিখ দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্তের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত হাজিরা বড়, মধ্যম ও ছোট শয়তানের ওপর সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করবেন। আর এ কাজটি করা সুন্নত। পরদিন ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে পুনরায় একইভাবে হাজীরা তিনটি শয়তানের ওপর পাথর নিক্ষেপ করবেন। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা শেষ হলে অনেকে সূর্যাস্তের আগেই মিনা ছেড়ে মক্কায় চলে যাবেন। আর মক্কায় পৌঁছার পর হাজীদের একটি কাজ অবশিষ্ট থাকে। সেটি হচ্ছে কাবা শরিফ তাওয়াফ করা। একে বলে বিদায়ী তাওয়াফ। স্থানীয়রা ছাড়া বিদায়ী তাওয়াফ অর্থাৎ কাবা শরিফে পুনরায় সাতবার চক্কর দেওয়ার মাধ্যমে হাজীরা সম্পন্ন করবেন পবিত্র হজ পালন।