২১ জুলাই, শুক্রবার। চট্টলার কন্ঠ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে কুমিল্লার লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে নতুন যুগের সূচনা হল ঢাকা–চট্টগ্রাম রেলপথে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন। এর মাধ্যমে ৩২১ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা–চট্টগ্রাম রেলপথের পুরো অংশ ডাবল লাইনে উন্নীত হল। এ পথে আর কোনো ট্রেনকে ক্রসিংয়ে পড়তে হবে না বলে কমে আসবে যাত্রার সময়। খবর বিডিনিউজের।
কুমিল্লা থেকে আখাউড়া পর্যন্ত রেলপথ সিঙ্গেল লাইনের হওয়ায় এতদিন ক্রসিংয়ে পড়ে বিলম্বিত হত অনেক ট্রেনের যাত্রা। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকা ও সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেত। এখন এই ৭২ কিলোমিটার রেলপথ ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন হওয়ায় পুরো ঢাকা–চট্টগ্রাম রেলপথে আর কোনো ট্রেনকে ক্রসিংয়ে পড়তে হবে না। ফলে অনির্ধারিত যাত্রা বিরতিতে সময়ও নষ্ট হবে না। পাশাপাশি সারাদেশের রেললাইন ডুয়েল গেজ ডাবল লাইনে পরিণত করার পরিকল্পনাও একধাপ এগোবে। পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলের রেলযোগাযোগ আরও সহজ হবে। নতুন এ পথে মিটার গেজ ও ব্রড গেজ এ দুই ধরনের ট্রেনই চলাচল করতে পারবে। বর্তমানে এই পথে মোট ২৩ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে এ পথ দিয়ে ৭২ জোড়া ট্রেন চলাচলের সক্ষমতা তৈরি হবে। সেই সঙ্গে মালবাহী ট্রেন চলাচলের সক্ষমতাও কয়েক গুণ বাড়বে।
রেলওয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা–চট্টগ্রাম রেলপথের ১২৪ কিলোমিটার ব্রিটিশ আমলে ডাবল লাইনে উন্নীত হয়। লাকসাম থেকে চিনকি আস্তানা পর্যন্ত ৬১ কিলোমিটার ডাবল লাইন হয় ২০১৫ সালের এপ্রিলে। পরের বছরে ফেব্রুয়ারিতে টঙ্গী থেকে ভৈরববাজার পর্যন্ত ৬৪ কিলোমিটার ডাবল লাইন চালু হয়। লাকসাম থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার রেলপথে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন করতে ২০১৪ সালে ছয় হাজার ৫০৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয় একনেকে। ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর শুরু হয় নির্মাণ কাজ। ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা থেকে লাকসাম পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার অংশ ট্রেন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ডাবল লাইন নির্মাণ এবং বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশনের উন্নয়নে এ প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে চার হাজার ১১৮ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এক হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে ইউরোপীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক। আর এক হাজার ২৬ কোটি টাকার বেশি অর্থায়ন করেছে সরকার।