অক্টোবর ৫, ২০২৪ ৬:০৮ অপরাহ্ণ

গাড়ি গ্যাসে রুপান্তরের হিড়িক পড়েছে।

দেশে জ্বালানি তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণ বাড়ায় বিকল্প জ্বালানি হিসেবে গ্যাস ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছেন গাড়ির মালিকরা। সিএনজি বা এলপিজিতে পরিচালন খরচ কম হওয়ায় গাড়িকে গ্যাসে রূপান্তরে ‘ভিহিক্যাল কনভার্সন’ প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভিড় করছেন তারা। এই কারণে গাড়ি সিএনজি বা এলপিজিতে রূপান্তরের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে গেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন- নগরীতে গাড়ি সিএনজি বা এলপিজিতে রূপান্তর করে এমন বড় প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৪টি। এসব প্রতিষ্ঠানে পুরো জুলাই মাসে সিএনজি বা এলপিজিতে রূপান্তর করা হয়েছে ৩৩টি প্রাইভেট কার। তবে আচমকা জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর শনি ও রবিবার দুই দিনেই ১৮টি প্রাইভেট কার সিএনজি বা এলপিজিতে রূপান্তর করা হয়েছে।

এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাইভেট কার গ্যাসে রূপান্তর করা হয়েছে ইন্ট্রাকো সিএনজি কনভার্সনে। প্রতিষ্ঠানটির সহকারী ব্যবস্থাপক খায়রুল বাশার চট্টলার কণ্ঠকে  বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় মানুষ এখন গ্যাসে আগ্রহী হচ্ছে বেশি। পুরো জুলাই মাসের ৩১ দিনে আমরা ১৫টি গাড়ি গ্যাসে রূপান্তর করেছি। সেখানে গত দুই দিনে রূপান্তর করেছি ৬টি।

শুক্রবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর ভিহিক্যাল কনভার্সন পরিস্থিতি বদলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন নাভানা সিএনজি ভিহিক্যাল কনভার্সনের ম্যানেজার মুজিবুল হক। তিনি  বলেন, জুলাইয়ে মাত্র ৪টি প্রাইভেট কার গ্যাসে রূপান্তর করেছি আমরা। পরিস্থিতি বদলে গেছে। আগস্টের ৬ ও ৭ তারিখেই ২টি প্রাইভেট কার গ্যাসে রূপান্তর করেছি।

 

সাউদার্ন সিএনজি লিমিটেডের সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার ফজলে রাব্বি বলেন, অকটেনের তুলনায় পরিচালন খরচ কম হওয়ায় বিকল্প জ্বালানি হিসেবে গ্যাসকে বেছে নিচ্ছেন গাড়ির মালিকরা। বেশি আসছে প্রাইভেট কার। জুলাইয়ে যেখানে মাত্র ৩টি প্রাইভেট কার আমরা গ্যাসে রূপান্তর করেছি- সেখানে গত দুই দিনে করা হয়েছে ৫টি প্রাইভেট কার।

গাড়ি গ্যাসে রূপান্তর করতে অর্ডার বাড়ায় কর্মব্যবস্ততা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন নাইট রাইডার সার্ভিসের কাস্টমার সার্ভিস ইনচার্জ তানজীম আহসান। তিনি চট্টলার কণ্ঠকে  বলেন, জুলাইয়ে কাজ কম ছিল। পুরো জুলাইয়ে মাত্র ৭টি প্রাইভেট কার গ্যাসে রূপান্তর করেছি আমরা। তবে আগস্টে অর্ডার বেড়ে গেছে। গত দুই দিনেই ৫টি গাড়ি গ্যাসে রূপান্তর করা হয়েছে।

‘ভিহিক্যাল কনভার্সন’ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- একটি প্রাইভেট কারে ৬০ লিটারের এলপিজি সিলিন্ডার সিস্টেম চালু করতে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়। একই আকারের সিএনজি সিলিন্ডার সিস্টেম চালু করতে খরচ হয় ৬৫ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। আর ১৯০ লিটার সিএনজি সিলিন্ডার সিস্টেম চালু করতে খরচ হবে ১ লাখ টাকা।

দেশে এখন গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজি (অটোগ্যাস) প্রতি লিটার ৫৬ টাকা ৮৫ পয়সা টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গাড়িতে ব্যবহৃত প্রতি ঘনমিটার সিএনজি বিক্রি হচ্ছে ৪৩ টাকায়। আর প্রাইভেট কার, মাইক্রো, হায়েস, পিকআপ, কাভার্ড ভ্যানে ব্যবহৃত অকটেনের দাম লিটার প্রতি ১৩৫, পেট্রোলের দাম লিটার প্রতি ১৩০ এবং ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ১১৪ টাকা।

১৫০০ সিসির একটি গাড়ির এলপিজি ধারণক্ষমতা ৬০ লিটার। একবার ফুল রিচার্জে একটা গাড়ি হাইওয়েতে ৪০০-৪৫০ এবং নগরীতে ৩০০-৩৫০ কিলোমিটার চলতে পারে। বিপরীতে সমপরিমাণের এক সিলিন্ডার সিএনজিতে গাড়ি চলতে পারে ৮০-১০০ কিলোমিটার। তেলের পরিবর্তে সিএনজিতে ৩০-৩৫% এবং এলপিজিতে ৫০-৫৫% জ্বালানি খরচ সাশ্রয় হবে।

 

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক