ইমরান নাজির, চট্টলার কন্ঠ।
চট্টগ্রামের আলোচিত আইনজীবী ওমর ফারুক বাপ্পী হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত স্ত্রী পলাতক আসামি রাশেদা বেগমকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সোমবার (৩১ জুলাই) গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে র্যাব। রোববার রাতে তাঁকে চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানাধীন সৈয়দ শাহ্ রোড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার রাশেদা কক্সবাজার চকরিয়া উপজেলার উত্তর লক্ষ্ম্যারচর ইউনিয়নের জাকির হোসেনের মেয়ে।
র্যাব জানায়, ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর নগরের চকবাজার থানার কে বি আমান আলী রোডে ভাড়া বাসা থেকে আইনজীবী ওমর ফারুক বাপ্পীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তাঁর হাত-পা ও মুখ টেপ দিয়ে মোড়ানো এবং স্পর্শকাতর অঙ্গ কাটা অবস্থায় পাওয়া যায়। ঘটনার পর বাপ্পীর বাবা আলী আহমেদ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
গত বুধবার চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালত এই মামলায় আসামি নিহতের স্ত্রী রাশেদা বেগমসহ দুজনকে ফাঁসি ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড রায় দেন। রায় প্রচারকালে রাশেদা পলাতক ছিলেন।
র্যাব-৭ সিনিয়র সহকারী পরিচালক নুরুল আবছার বলেন, মামলার রায় ঘোষণার পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামিসহ অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালায় র্যাব। গোপন সংবাদে রাশেদার অবস্থানের তথ্য পেয়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর আসামি রাশেদাকে চকবাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
নুরুল আবছার বলেন, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে আসামি রাশেদার বিরুদ্ধে বাকলিয়া থানায় একটি মাদকের ও কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা থাকার তথ্য পাওয়া যায়।
মামলায় জানা গেছে, রাশেদা ছাড়াও এই মামলার আরেক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার সোভনদন্ডী গ্রামের হারুনুর রশীদের ছেলে হুমায়ন রশীদ। যাবজ্জীবন আসামিরা হলেন—বরগুনার আল আমিন (২৮), নোয়াখালীর আকবর হোসেন রুবেল (২৩) ও খাগড়াছড়ির মো. পারভেজ আলী (২৪)। গত বুধবার আদালতে রায়ের সময় আসামি হুমায়ুন রশিদ ও পারভেজ আলী উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে রাশেদা বেগম, আল আমিন ও আকবর হোসেন পলাতক ছিলেন।
মামলার তদন্তে আরো জানা গেছে, দেলোয়ার নামে এক ইয়াবা পাচারকারীর স্ত্রী ছিলেন রাশেদা বেগম। স্বামীর মামলার সূত্র ধরে আইনজীবী বাপ্পীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। একপর্যায়ে তাঁরা গোপনে বিয়ে করেন। পরে বিয়ের কাবিননামা নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। পরস্পরের বিরুদ্ধে মামলাও করেন। খুনের ঘটনার কয়েক দিন আগে ওই নারী (রাশেদা) তাঁর স্বামীসহ থাকবেন বলে বাসা ভাড়া নেন। ঘটনার রাতে ওই বাসায় থাকতে যান বাপ্পী। পরে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।