ডিসেম্বর ৩, ২০২৪ ৫:১৭ অপরাহ্ণ

সারাদিন কালুরঘাটে ছিল সীমাহীন ভোগান্তি

মোটরসাইকেলের টোল নিয়ে ঝামেলায় চট্টগ্রামের কালুরঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল কয়েক ঘণ্টা।

আজ বুধবার (২ আগস্ট) সকাল থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয় কর্ণফুলীর দুই তীরে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের। পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফেরি চলাচল শুরু হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের চট্টগ্রাম অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা  চট্রলার কণ্ঠকে বলেন, “মঙ্গলবার রাতে মোটরসাইকেল চালকদের সঙ্গে টোল বক্সের কর্মীদের বিতণ্ডা হয়। এরপর ‘নিরাপত্তাজনিত কারণে’ সকালে কিছু সময়ের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়।”

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল যোগাযোগ শুরুর আগে সংস্কার কাজের জন্য তিন মাসের জন্য কালুরঘাট সেতু বন্ধ করে দেওয়া হয় মঙ্গলবার দুপুরে। নদীর ওই অংশ পারাপারের জন্য চালু করা হয় ফেরি।

চট্টগ্রাম নগরীর সঙ্গে বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার একাংশের যোগাযোগের মাধ্যম এই কালুরঘাট সেতু। সড়ক পথের সব ধরনের যানবাহনের পাশাপাশি এ সেতু দিয়ে ট্রেনও চলত এতদিন।

কর্ণফুলীর ওপারের বোয়ালখালীর অনেকে প্রতিদিন নদী পার হয়ে শহরে আসেন চাকরি বা পেশাগত কারণে। শহর থেকেও অনেকে বোয়ালখালীতে যান নানা কাজে। বুধবার সকালে ফেরি বন্ধ থাকায় তারা ভোগান্তিতে পড়েন।

শহরের একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষক হেলাল উদ্দিন টিপু বোয়ালখালীতে থাকেন। সকালে শহরে আসার জন্য ঘাটে এসে দেখেন ফেরি চলছে না। পরে বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে বন্ধ সেতু দিয়েই তিনি নদী পার হন।

ক্ষোভের সুরে তিনি চট্টলার কন্ঠকে  বলেন, “যারা মোটরসাইকেলে ছিলেন, তারা ঝুঁকি নিয়ে ব্রিজ দিয়েই পার হয়েছেন। আবার অনেকে নৌকা নিয়েও পার হয়েছেন। বেশিরভাগ লোক পার হয়েছেন ব্রিজ দিয়ে হেঁটে।”

কালুরঘাট ব্রিজে যাতে গাড়ি উঠতে না পারে, সেজন্য দুই দিকে রাস্তা কেটে দেওয়া হয়েছে। সকালে ফেরি বন্ধ থাকায় মোটরসাইকেল আরোহীরা কাটা রাস্তা পার হয়ে ব্রিজে উঠতে পারলেও অন্যান্য যানবাহনের সেই সুযোগ ছিল না।

বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসাব উদ্দিন এ ব্যাপারে  বলেন, “আগে ব্রিজে মোটরসাইকেলে টোল আদায় করা হতো না। এখন ফেরিতে টোল নির্ধারণ করায় রাতে একটু বাকবিতণ্ডা হয়েছে। তবে ইউএনওসহ আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সমস্যা সমাধান করে দিয়েছি। সকাল থেকে নিরাপত্তার জন্য আমাদের পুলিশের একটি গাড়ি রাখা আছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।”

ফেরি পারাপারের জন্য সবচেয়ে বেশি ৫৬৫ টাকা টোল দিতে হবে ট্রেইলার পারাপারের ক্ষেত্রে। বড় ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানে ৪৫০ টাকা, মাঝারি ট্রাকে ২২৫ টাকা, মিনি ট্রাকে ১৭০ টাকা দিতে হবে।

বড় বাস পারাপারে ২০৫ টাকা; মিনি বাস ও কোস্টারে ১১৫ টাকা; মাইক্রোবাস, পিকাপ, জিপ ৯০ টাকা; কার ৫৫ টাকা; ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার ১৩৫ টাকা; তিন চাকার অটোরিকশা ২৫ টাকা; মোটরসাইকেল ১০ টাকা এবং রিক্সা, ভ্যান, বাইসাইকেলকে ৫ টাকা দিতে হবে

সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে বলা হয়েছিল, কালুরঘাটে দু’টি ফেরি সার্বক্ষণিক যানবাহন পারাপার করবে; একটি ফেরি স্ট্যান্ডবাই হিসেবে থাকবে কিন্তু ঘাটে এখন চলছে কেবল একটি ফেরি।

যাত্রীদের অভিযোগ, ফেরি এলে সবার আগে মোটরসাইকেল উঠে পড়ে। ফলে অন্যান্য যানবাহন তত বেশি উঠতে পারে না। আবার আগে ফেরিতে ওঠার প্রতিযোগিতার কারণেও সমস্যার সৃষ্টি হয়। মাত্র একটি ফেরি চালু রাখায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে।

এদিকে, মঙ্গলবার জোয়ারের পানিতে ফেরিতে ওঠার বেইলি সেতু ডুবে যাওয়ার কারণেও সমস্যায় পড়েছিলেন যাত্রীরা।

বিষয়টি স্বীকার করে সওজ প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা চট্রলার কণ্ঠকে বলেন, “গত রাতে বিষয়টি আমরাও দেখেছি। এলোমেলো মোটরসাইকেলের কারণে ফেরিতে গাড়ি ওঠানামার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলেছি।”

আজ বুধবার থেকে দু’টি ফেরি চালু করা হল বলে জানান তিনি।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক