ডিসেম্বর ৩, ২০২৪ ৫:৫৬ অপরাহ্ণ

কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের উৎপাদন বেড়েছে

নোবেল চাকমা।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই উপজেলাসহ জেলার সর্বত্র গত ৬ দিন টানা ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই বৃষ্টির পানির প্রায় পুরোটাই খাল, বিল, নালা, নর্দমাসহ বিভিন্নভাবে গড়িয়ে কাপ্তাই লেকে এসে পড়ছে। ছয় দিনের বৃষ্টির পানিতে কাপ্তাই লেকে প্রয়োজনের চেয়ে ১১ ফুট পানি বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা গেছে। লেকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কাপ্তাইয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনও বেড়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এ টি এম আব্দুজ্জাহের চট্রলার কন্ঠকে জানান, টানা বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র উপকৃত হয়েছে।

এসময় তিনি বলেন, “আষাঢ়-শ্রাবণ ২ মাস ভরা বর্ষা মৌসুম থাকলেও এতদিন বৃষ্টি হচ্ছিল না। বৃষ্টির অভাবে কাপ্তাই লেকে পানির স্তর সর্বনিম্ন পর্যায়ে এসে পৌঁছার উপক্রম হয়েছিল। ২৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা থাকলেও ২৫ থেকে ৩০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছিল না। ৫টি ইউনিট সচল থাকলেও চালানো হতো মাত্র ১টি ইউনিট। পানির অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হচ্ছিল। কাপ্তাই লেকে রুলকার্ভের (পানির পরিমাপ) চেয়ে পানির স্তর ১০ ফুট নিচে নেমে আসে কিন্তু গত ৩ আগস্ট ভারি বৃষ্টি শুরু হয়। টানা ভারি বৃষ্টি আজ শনিবার (১২ আগস্ট) পর্যন্ত প্রবহমান ছিল। এই কয়দিনের বৃষ্টিতে কাপ্তাই লেকে পানির উচ্চতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়। লেকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। ৫টি ইউনিটের সবগুলোই এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে সচল রয়েছে। বর্তমানে ২০১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে। উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই জাতীয় গ্রীডে সঞ্চালন করা হচ্ছে।”

অনুসন্ধানে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, রুলকার্ভ অনুযায়ী কাপ্তাই লেকে এখন (১২ আগস্ট) পানি থাকার কথা ৯২.৫২ ফুট মীন সী লেভেল কিন্তু লেকে এখন পানি রয়েছে ১০১.৪৬ ফুট মীন সী লেভেল। পাহাড়ি ঢল, ঝর্ণা ধারা এবং উজান থেকে এখনো পানির ধারা অনবরত কাপ্তাই লেকে এসে পড়ছে। এর ফলে প্রতিদিন লেকে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাপ্তাই লেকে সর্বমোট পানি ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ১০৯ ফুট মীন সী লেভেল। অবস্থা দৃষ্টে অনুমিত হচ্ছে খুব সহসা কাপ্তাই লেকের পানি ধারণ ক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। লেকের পানি ১০৯ ফুট এম এস এল পর্যন্ত আসার পূর্বেই স্পীলের ১৬টি গেট খুলে দিয়ে বাড়তি পানি কর্ণফুলী নদীতে ছেড়ে দেওয়া হবে।

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি দায়িত্বশীল সূত্র চট্রলার কন্ঠকে জানায়, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিদ্যুৎ উৎপাদন করে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করে থাকে। বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ অত্যন্ত কম হওয়ায় এই কেন্দ্র বরাবর লাভে থাকতে পারছে। তবে লেকে পর্যাপ্ত পানি থাকলে বিদ্যুৎ উৎপাদন আরো বৃদ্ধি করাও সম্ভব হবে। এখন ২০১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও এই কেন্দ্রের আরো ৪০ মেগাওয়াট বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। জাতীয় গ্রীডের চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন আরো বাড়ানো হতে পারে বলেও সূত্র আশা প্রকাশ করছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক