কোরবানির গরুর হাটের ন্যায় মনসা পূজা উপলক্ষে নগরীর বিভিন্ন গলি এবং মোড়ে বসেছে ছাগলের অবৈধ হাট। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) স্থায়ী হাট ইজারা দিয়ে ইজারাদারদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করলেও অবৈধ হাট উচ্ছেদে তাদের কোন উদ্যোগ নেই।
সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, এক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশন রহস্যজনক কারণে নীরব রয়েছে। বিবিরহাট বাজারের ইজারাদার সিটি মেয়রকে লিখিত অভিযোগে বলেন, ঈদুল আজহার সময় শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ গরু-ছাগলের হাট বসিয়ে বেচা-কেনার কারণে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বর্তমানে সনাতন ধর্মাবলমন্বীদের মনসা পূজা উপলক্ষে যখন তারা ব্যবসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ঠিক তখনই আগের মত হাজারী গলি, সিনেমা প্যালেসসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ছাগলের অবৈধ হাট বসছে। ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে এসব অবৈধ হাট উচ্ছেদ করার আবেদন করেন তিনি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন চৌধুরী চট্টলার কণ্ঠকে বলেন, নগরীর অবৈধ ছাগলের হাট নিয়ে ইজারাদার গত বৃহস্পতিবার একটি আবেদন করেছেন। আবেদনটি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানো হবে। ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে অবৈধ ছাগলের হাট উচ্ছেদ করা হবে। সরেজমিন পরিদর্শন এবং খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কদমতলী ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ হাট বসিয়ে বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে ৫ শতাধিক ছাগল।
নগরীর যেসব এলাকায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা বেশি সেখানকার অলি-গলিতে অবৈধ ছাগলের হাট বসেছে। নগরীর হাজারী গলির পাশে বিক্রির জন্য ছাগল নিয়ে এসেছেন ইসমাইল বেপারি। তিনি সারাবছরই ছাগলের ব্যবসা করেন। শহরে স্থায়ী গরু-ছাগলের হাট থাকা সত্ত্বেও হাজারী গলির মুখে ছাগল আনার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে ভাল ক্রেতা আছেন। তাই নিয়ে এসেছেন। এখানে ছাগল বেচা-কেনা বৈধ নয় একথা স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি হাসি দিয়েই চুপ হয়ে যান।
আগামী ১৭ আগস্ট সর্পদেবী মনসা পূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এইদিন মনসা পূজার পাশাপাশি সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন দেবী মনসার উদ্দেশ্যে পাঁঠা ছাগল ও হাঁস বলি দিয়ে থাকে। এই পূজাকে কেন্দ্র করে নগরীর স্থায়ী হাটসমূহের পাশাপাশি অবৈধ হাটেও কয়েকদিন ধরে ছাগলের জমজমাট হাট বসছে। ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম হয়ে উঠেছে হাট। হাটে পাহাড়ি বিভিন্ন জাতের ছাগলের পাশাপাশি পাটনাইয়া জাতের ছাগল বিক্রি করছে বিক্রেতারা।
আলাপকালে সিনেমা প্যালেস এলাকার বিক্রেতা রউফ তালুকদার জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি ছাগল পালন করে আসছেন। পূজা উপলক্ষে পাঁঠা বিক্রি করতে এসেছেন তিনি। দামও ভালো পাচ্ছেন বলে জানান।
বিক্রেতা অজয় দাশ ও শিবু দাশ জানান, এবছর মাঝারি সাইজের ছাগলের চাহিদা বেশি। ছাগল কিনতে আসা প্রফুল্ল শীল, মনু দাশ ও নয়ন জানান, হাটে প্রচুর ছাগল থাকলেও দাম বেশ চড়া।
মন্তব্য দিন :
[gs-fb-comments]