বিশেষ প্রতিনিধি।
নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন ফরেস্ট রোডস্থ সামারহিলের একটি বাসায় পাচারের জন্য ১৪-১৫ জন নারীকে আটকে রেখে জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার সংবাদ সংগ্রহে গেলে মানবপাচারকারী ও ইয়াবা ব্যবসায়ী জুয়েলের নির্দেশে এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী আরমানের নেতৃত্বে সাংবাদিকদের উপর হামলা চালায় ১৫-২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র। ১৩ই নভেম্বর( মঙ্গলবার) সন্ধ্যা ৬টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
হামলাকারীরা হামলা চালিয়ে সাংবাদিকদেরকে গুরুতর আহত করে এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ব্যবহৃত ভিডিও ক্যামেরা ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। উক্ত ঘটনায় সাংবাদিক মোফাচ্ছিরুল হক বাচ্চু বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন। ১৪/১১/২০২৩ ইং তারিখের মামলা নং ৬(১১)২৩, ধারা- ১৪৩, ৩২৩, ৩০৭, ৩২৫, ৩৭৯, ৫০৬ । মামলা দায়েরের পর গোপন সূত্রে প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে এস আই মামুনের নেতৃত্বে একটি টিম হামলার নেতৃত্বদানকারী আরমানকে বুধবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৩ই নভেম্বর ( মঙ্গলবার) বিকেল ৪টায় বিশেষভাবে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ইয়াবা ব্যবসায়ী ও মানবপাচারকারী শিবু পালিত প্র: ইয়াবা জুয়েল পাচারের জন্য ১৪-১৫ জন নারীকে আটকে রেখে জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করছে এমন সংবাদ পেয়ে দৈনিক দেশের কথা ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যম বাংলা টুডে’র প্রতিনিধি সাংবাদিক মোফাচ্ছিরুল হক বাচ্চুসহ আরো ৪ জন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে যান। ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে সকল সাংবাদিকরা নিজ নিজ ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও এবং ছবি ধারণ করে। পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে চলে আসার সময় জুয়েলের নির্দেশে হঠাৎ এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদকসেবী আরমান কিশোর গ্যাংয়ের ১৫-২০ জন টোকাই নিয়ে সাংবাদিকদের উপর হামলা চালায়।সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে সাংবাদিকদেরকে গুরুতর আহত করে এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ব্যবহৃত ভিডিও ক্যামেরা ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং একটা মোবাইল ফোন ভাংচুর করে।
জানা যায়, বোয়ালখালীর হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান শিবু পালিত জুয়েল একসময় লালদিঘি এলাকার একটি রেস্তোঁরার ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতো। পরে দারিদ্র্যতাকে জয় করার স্বপ্ন নিয়ে ইয়াবা ব্যবসা, মানবপাচার, পতিতাব্যবসা এবং কালোবাজারির সাথে জড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন যাবত এসব অবৈধ ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়।
সামার হিলের একটি দ্বিতল বাড়ী ভাড়া নিয়ে প্রায় ৫ বছর পতিতা ব্যবসা চালিয়ে আসতেছিলো জুয়েল। ২০২১ সালে ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩০ জন নারী পুরুষকে গ্রেফতার করে জুয়েলের বিরুদ্ধে মানবপাচারের মামলা দায়ের করে উক্ত বাড়ী সিলগালা করে দেয়। এরপরে জামিনে বেরিয়ে জুয়েল বাস টার্মিনালের পাশে সাতকানিয়া গেস্ট হাউজের মালিকানা নিয়ে সেখানে পতিতা ব্যবসা শুরু করে। ৭-৮ মাস আগে পূর্বের স্থানে অর্থাৎ সামার হিলে পাহাড় কেটে নিজস্ব টিনশেড গৃহ নির্মাণ করে ১০-১২টি রুম করে সেখানে স্থায়ীভাবে পতিতা ব্যবসা শুরু করে। সেখানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরণের মাদকও বিক্রি হয়। প্রশাসন অভিযান চালালে পাহাড় দিয়ে পালানোর জন্য পেছনে একটি দরজা রাখা হয়েছে।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, জুয়েলের পতিতালয়ে যেসব বিত্তশালী খদ্দের যায় গোপনে তাদের ভিডিও ধারণের মাধ্যমে জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। এছাড়া জুয়েল পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের নারী পাচারকারী চক্রের সাথেও সম্পৃক্ত।