তুস্কের পার্লামেন্টে সরকার ও বিরোধী দলীয় এমপিদের মধ্যে ব্যাপক হাতাহাতি-মারামারি হয়েছে। মারামারির পর পার্লামেন্টের মেঝের একাধিক স্থানে রক্ত দেখা গেছে বলেও জানা গেছে। গত শুক্রবার তুরস্কের পার্লামেন্টের অধিবেশন ছিল। সেই অধিবেশনে বিরোধীদলীয় এমপি আহমত সিকের বক্তব্য থেকে গণ্ডগোলের সূত্রপাত। নিজ বক্তব্যে তিনি কারাবন্দী এমপি ক্যান আতালায়ের মুক্তি দাবি করেন। এই দাবি জানানোর পর বক্তব্য চলমান থাকার মধ্যেই তার দিকে তেড়ে আসেন একেপি পার্টির কয়েকজন এমপি। আহমত সিককে উপর্যুপরি কিল-চড়-ঘুষি মারতে থাকেন তারা।
এ সময় আহমেত সিককে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন অন্যান্য বিরোধী এমপি। একেপি পার্টির এমপিরাও জড়ো হতে থাকেন এবং এক সময় এই সমবেত এমপিরা নিজেদের মধ্যে তুমুল মারামারি শুরু করেন। সরকারবিরোধী আন্দোলন এবং সরকার পতন সংক্রান্ত ষড়যন্ত্রে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কারাগারে রয়েছেন ক্যান আতালায়। ২০২২ সালে তাকে ১৮ বছর কারাবাসের সাজা দিয়েছে আদালত। ২০১৩ সালে তুরস্কজুড়ে যে ব্যাপক সরকারবিরোধী আন্দোলন হয়েছিল, সেই আন্দোলনেও সামনের সারিতে ছিলেন আতালায়। কারাগারে বসেই ২০২৩ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আতালায় এবং জয়ী হন। শুক্রবারের অধিবেশনে সরকারি দল একেপি পার্টিকে উদ্দেশ্য করে আহমত সিক বলেছেন, “আপনারা যে ক্যান আতালায়কে সন্ত্রাসী বলেন, তাতে আমরা অবাক হই না; কারণ যারা আপনাদের বিপক্ষে, তাদের সবাইকেই সন্ত্রাসী বলেন আপনারা।” “কিন্তু সত্য হলো, আপনাদের মতে যিনি ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী, তিনি এই পার্লামেন্টের একজন নির্বাচিত এমপি এবং আজ যে আসনে আমরা বসছি, এমন একটি আসন কিন্তু এই পার্লামেন্টে তার জন্যও নির্দিষ্ট।”
আহমত সিক যখন এসব কথা বলছিলেন, তখনই তার দিকে তেড়ে আসেন একেপি পার্টির এমপিরা। এ সময় পার্লামেন্টের অধিবেশন পরিচালনা করছিলেন ডেপুটি স্পিকার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় তিন ঘণ্টার জন্য অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন তিনি। তিন ঘণ্টার পর সেশন শুরু হওয়ার পর অধিবেশন পরিচালনার দায়িত্বে আসেন স্পিকার।
হাতাহাতিতে আহত হয়েছেন তুরস্কের বিরোধী দল ডিইএম পার্টির পার্লামেন্টারি দলের নেত্রী গুলিস্তান কোকিগিতও। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আজকের এই ঘটনায় এটা স্পষ্ট যে আমাদের আঘাত করার পরিকল্পনা তাদের (একেপি পার্টি) আগে থেকেই ছিল এবং তারা সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়ে এসেছিল।