ডিসেম্বর ৪, ২০২৪ ৯:১৭ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবান তুমব্রু সীমান্তের ওপারে দিনভর গুলি, এইপারে আতঙ্ক

  1. বান্দরবান প্রতিনিধিবান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার ভূখন্ড থেকে গতকাল সারাদিনই একের পর এক গুলি ও ভারী গোলাবারুদের শব্দ শোনা গেছে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
    গতকাল শনিবার ভোর থেকে ঘুমধুম ইউনিয়নের ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাছাকাছি কয়েক কিলোমিটার এলাকায় গুলির শব্দ শুনা যায় বলে জানান স্থানীয়রা। তারা জানান ভোর ৫টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত গোলাগুলি চলেছে। তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখার কোণাপাড়ায় যেখানে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা রয়েছে তার পূর্বদিক থেকে বেশি গুলির শব্দ ভেসে আসে। ৩টার পর গুলির শব্দ থামে। এ সময় কোন যুদ্ধবিমান ও ফাইটার হেলিকপ্টার দেখা যায়নি।
    তারা আরও জানান, সীমান্ত এলাকাজুড়ে বিজিবি ও পুলিশের সদস্যরা সবসময় সর্বোচ্চ সতর্কবাস্থায় রয়েছে। এক-দুইদিন পর পর দিনের কোন একটা সময় গুলির শব্দ আসে। মনে হয়, তাদের ওইদিকে এভাবে গোলাগুলি আরও অনেক দিন চলবে। এপারে আমাদের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
    জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরেই রাখাইনে আরাকান আর্মির অবস্থান লক্ষ্য করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বোমা বর্ষণ করছে।
    কোণাপাড়া রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের কয়েকজন রোহিঙ্গা বলেন, ভোর থেকে মিয়ানমার অভ্যন্তরে কয়েকটি এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি চলে। ভোর থেকে বিকাল পর্যন্ত একটানা গুলি চলছিল। একদম সীমান্তের বরাবর হওয়ায় আমরা কোণাপাড়ার আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গারা সবসময় ভয় ও আতঙ্কে থাকি।
    জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরেই রাখাইনে সংগঠন আরাকান আর্মির অবস্থান লক্ষ্য করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বোমা বর্ষণ করছে। সংঘাতের মধ্যে গত ২৮ অগাস্ট বান্দরবানের ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে দুটি অবিস্ফোরিত মর্টার শেল এসে পড়ে।
    এরপর ৩১ অগাস্ট রাখাইন রাজ্যের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মংডু শহরতলীতে আরাকান আর্মির সদস্যরা একটি পুলিশ পোস্টে হামলা চালিয়ে ১৯ জনকে হত্যা করে বলে প্রকাশিত সংবাদে দাবি করা হয়। আরাকান আর্মির দখলে নেওয়া পুলিশ ফাঁড়ি দখলে নিতে সেনাবাহিনী এগোচ্ছে।
    এর মধ্যে গত ৩ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের দুটি যুদ্ধবিমান ও দুটি ফাইটিং হেলিকপ্টারে গোলা বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে এসে পড়ে। এসব ঘটনায় দেশটির রাষ্ট্রদূতকে দুইবার ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানায় ঢাকা। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, এটা উসকানিমূলক না। এটা স্ট্রে (আকস্মিক চলে এসেছে)।
    টানা তিন সপ্তাহ ধরে গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়ার পর ৪ ও ৫ সেপ্টেম্বর কোনো শব্দ পাওয়া যায়নি। কিন্তু ৬ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে ফের গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া গেলেও কোনো যুদ্ধবিমান বা ফাইটিং হেলিকপ্টার উড়তে দেখা যায়নি।
    জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, সীমান্তে মানুষের মধ্যে যে আতঙ্ক কাজ করছে, সেজন্য সরকার তাদের পাশে আছে। বিজিবিসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

সাম্প্রতিক