বাংলায় প্রচলিত একটা কথা আছে, একবার না পারিলে দেখো শতবার। বাংলাদেশের জন্য এ কথাটাকে ঘুরিয়ে শতবারের জায়গায় ১৪ বার বললেও বোধহয় খুব বেশি ভুল হবে না! পাকিস্তানের সঙ্গে এর আগে ১৩টি টেস্টে খেলে কখনই জিততে পারেনি বাংলাদেশ। একটি ম্যাচেই ড্র করতে পেরেছিল, ২০১৫ সালে খুলনায় হয়েছিল সেটি। অবশেষে ১৪তম টেস্টে এসে প্রথম জয় ধরা দিয়েছে টাইগারদের। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে ১০ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস লিখেছে নাজমুল হাসান শান্তর দল।
দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানের শেষ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ আলীকে মেহেদী হাসান মিরাজ যখন এলবিডব্লিউ আউট করলেন, সব উইকেট হারানো স্বাগতিকদের স্কোরবোর্ডে তখন ১৪৬ রান। অর্থাৎ পাকিস্তানের মাটিতে ইতিহাস লিখতে বাংলাদেশের দরকার ‘মাত্র’ ৩০ রান। সে রান নিতে বাংলাদেশের দরকার হলো মোটে ৬.৩ ওভার।
nagad
nagad
রান তাড়ায় নেমে শাহিন আফ্রিদির প্রথম ওভারে এক বাউন্ডারিতে ৭ রান নেন ওপেনার জাকির হাসান। পরের দুই ওভার একটু দেখে শুনে খেলেন দুই ওপেনার। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে নাসিম শাহের শেষ দুই বলে বাউন্ডারি মেরে বাংলাদেশকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান সাদমান ইসলাম।
অবশ্য জয়ের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। সালমানের পরের ওভারের তৃতীয় বলে ফাইন লেগ দিয়ে বাউন্ডারি মেরে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন জাকির। একইসঙ্গে পাকিস্তানের ঘরের মাটিতে ১০ উইকেটে টেস্ট জেতা প্রথম দেশ হিসেবে ইতিহাসে নাম ওঠে বাংলাদেশের।
KSRM
KSRM
এর আগে প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ৬ উইকেটে ৪৪৮ রানের জবাবে অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ভর করে বাংলাদেশ থেমেছিল ৫৬৫ রানে। এতে প্রথম ইনিংস থেকে ১১৭ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর বল হাতেও তোপ দেখিয়েছে টিম টাইগার্স।
আজ পঞ্চম দিনে খেলতে নামে বাংলাদেশ। সফরকারীদের আক্রমণাত্মক বোলিংয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা পাকিস্তান অলআউট হয়েছে ১৪৬ রানে।
বাংলাদেশের এই জয়টা এসেছে অনেকটা কাকতালীভাবেই। নয়তো চতুর্থ দিনের খেলা শেষেও এমন জয় কল্পনা করেননি ক্রিকেটপ্রেমীরা। চতুর্থ দিনশেষে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তান ৯৪ রানে পিছিয়ে থাকলেও ব্যাটিং স্বর্গে হাতে তখনো ৯ উইকেট থাকায় ভাবা হচ্ছিল ড্রই এই টেস্টের পরিণতি। তবে শেষ পর্যন্ত পঞ্চম দিনে বল করতে নেমে পাশার দান পাল্টে দিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা।
বোলিংয়ে দিনের শুরুটা হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানা করলেও পরের গল্পটা কেবলই স্পিনারদের। পাকিস্তান যেখানে পেসার দিয়ে সাজিয়েছে তাদের বোলিং আক্রমণ, সেখানে একাদশে দুই স্পিনার রাখাকে অনেকে বিলাসিতা মনে করেছিলেন। তবে শুরুতে ভুল মনে হলেও দিনশেষে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক স্পিনাররাই। অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে কাবু পাকিস্তানের সাত ব্যাটার। এক রিজওয়ান ছাড়া সুবিধা করতে পারেননি কোনো ব্যাটার।