আজ শুভ মধু পূর্ণিমা। সারা বিশ্বের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম শুভদিন। বর্ষাবাসের দ্বিতীয় পূর্ণিমা তিথি ভাদ্র মাসে এই পূর্ণিমা উদযাপিত হয়। তাই এর অপর নাম ভাদ্র পূর্ণিমা। তবে বিশ্বে এটি ‘মধু পূর্ণিমা’ নামে পরিচিত।
এ পূর্ণিমা তিথিতে বানর কর্তৃক ভগবান বুদ্ধকে মধুদানের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা জড়িয়ে আছে। ভাদ্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এটি সংগঠিত হয়েছিল বলেই এর ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় গুরুত্ব রয়েছে।
nagad
nagad
এই দিনে মৌচাকের মধু দান করে বানর খুশিতে গাছে লাফালাফি করতে গিয়ে মাটিতে পড়ে মারা যায়। বানরের এই মধুদান একটি নিছক ঘটনা বলে মনে হলেও এর পেছনে রয়েছে এক অবলা প্রাণীর বুদ্ধভক্তি, দান, সেবা ও ত্যাগের একটি পরম শিক্ষা।
আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে তথাগত বুদ্ধ এক বনে তিন মাসব্যাপী বর্ষাবাস অধিষ্ঠান করছিলেন। ধ্যানে মগ্ন অবস্থায় এই মহাপুরুষের শরীর থেকে আলো বের হচ্ছিলো। অন্ধকার জঙ্গল আলোকিত হয়ে যায়। এ সময় বনের এক দলছুট অস্থির হাতি এসে হাজির হলো। তথাগত বুদ্ধকে দেখে অস্থির হাতির মন স্থির হয়ে গেল। হাতিটি ভাবলো, এ কোনও সাধারণ মানুষ নন। তার সেবা করে জীবন কাটিয়ে দেবে। হাতিটি বুদ্ধের সেবায় নিয়োজিত হয়ে গেলো।
KSRM
KSRM
হাতিকে বুদ্ধের সেবা করতে দেখে বনের এক বানর বুদ্ধকে কী দান দেবে অস্থির হয়ে গেলো। এ সময় গাছের মধ্যে একটি মৌচাক দেখতে পেলো। উৎফুল্ল মনে সিদ্ধান্ত নিলো মৌচাকটি বুদ্ধকে দান করবে। মৌচাকের মধুদান করে বানর খুশিতে গাছে লাফালাফি করতে গিয়ে মাটিতে পড়ে মারা যায়। এতে দানীয় চেতনায় বানর দেবপুত্ররূপে নবজন্ম লাভ করলো। এ ঘটনার পর থেকে মধু পূর্ণিমা পালিত হয়ে আসছে।
এ উপলক্ষে সারাদেশের প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে সকালে পঞ্চশীল ও অষ্টশীল গ্রহণ, বুদ্ধ পূজা, ফুল পূজা, বুদ্ধ মুর্তি দান, সংঘ দান, অষ্ট পরিষ্কার দান ও বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পিণ্ড দানসহ নানাবিধ দানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি রাখা হয়েছে। এছাড়া দেশ জাতি তথা সকলের মঙ্গল কামনায় সন্ধ্যায় প্রদীপ পূজা ও সমবেত প্রার্থনা করা হয়।