মুহুিবুল হাসান।
নাম তার মাসুদ করিম। নগরের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় সরকারি জায়গায় দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজি, সাংবাদিক এবং প্রশাসনকে হুমকি—সব অভিযোগই ছিল তার বিরুদ্ধে। তবে বন্দর-পতেঙ্গার সাবেক এমপি লতিফের প্রশ্রয়ে সবাই থাকতো তার ভয়ে তটস্থ। কেউ প্রতিবাদ করলেই তার বিরুদ্ধে মামলা ঠুকতেন তিনি। তার মাথায় এমপির ‘আশীর্বাদ’ থাকায় প্রশাসনও ছিল তার কাছে অসহায়। অবশেষে চাঁদাবাজিসহ বেশ কয়েকটি মামলার আসামি সেই মাসুদ করিমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরের দক্ষিণ পতেঙ্গা এলাকা থেকে পতেঙ্গা থানায় হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মাসুদ করিম (৩৭) একই থানার দক্ষিণ পতেঙ্গার ফুলছড়ি পাড়ার নুর মোহাম্মদের ছেলে।
মাসুদকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর নগরের পতেঙ্গা থানায় হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেয়া জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ পেয়ে মাসুদ করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্থানীয় মানুষদের সাথে আলাপের সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সৈকত উপকূলে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘চিটাগং সিটি আউটার রিং রোড’ নির্মাণ করেছে। সেই প্রকল্পের আওতায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে সৈকতের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য লাগানো হয় ফুলের গাছ। তৈরি করা হয় বাগান। সেসব নষ্ট করে তৈরি করা হয়েছে দুই শতাধিক দোকান। আর প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে সেসব দোকান থেকে ‘পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত হকার ক্যামেরাম্যান শ্রমজীবী সমবায় লিমিটেড’ সমিতির ব্যানারে দৈনিক ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা তুলতেন মাসুদ করিম।
শুধু এসবই নয়, পতেঙ্গা সৈকতের মূল পয়েন্ট থেকে বালুচরের দিকে নামতে ওয়াকওয়েতে বসানো হয়েছে নৌকা, দোলনাসহ ৮ থেকে ১০টি রাইড। সেখান থেকে দৈনিক ৩০০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়। এসবের নিয়ন্ত্রণেও রয়েছেন এই মাসুদ করিম। ‘পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত হকার ক্যামেরাম্যান শ্রমজীবী সমবায় লিমিটেড’ সমিতির ব্যানারে এসব স্থাপনা বসিয়ে প্রকাশ্যে চলতো এসব চাঁদাবাজি। আর সরকার পতনের আগ পর্যন্ত এই চাঁদাবাজির নেতৃত্ব দিয়েছেন কথিত সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাসুদ করিম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পতেঙ্গা থানার সাবেক এক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রামের কন্ঠকে বলেন, এই মাসুদ করিম মূলত তৎকালীন এমপি এমএ লতিফের প্রত্যক্ষ মদদে অপকর্ম করে বেড়াতো। তার বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার সাহত করতো না। আমি তার অপকর্মে বাধা দিতে চাইলে আমাকেও এমপির দ্বারা ফোন করিয়েছিলেন