চুরির অভিযোগে মামুন নামে একজনকে পিটিয়ে হত্যার জেরে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল থেকে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনায় শুক্রবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরো ৯ জন। তাদের খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সহিংসতা বন্ধে খাগড়াছড়ি পৌরসদর এলাকায় শুক্রবার বেলা ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
সহিংসতার ঘটনায় নিহতরা হলেন- খাগড়াছড়ি সদরের জোনাল চাকমা (২৫) ও রুবেল ত্রিপুরা (২১) এবং দীঘিনালার ধনরঞ্জন চাকমা (৩০)।
nagad
nagad
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রিপল বাপ্পি চাকমা। তিনি বলেন, ‘৩ জনের মরদেহ হাসপাতালে রাখা আছে। ৯ জন বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়াও ৪ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
এদিকে হতাহতদের দেখতে সেনাবাহিনীর দীঘিনালা জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল ওমর ফারুক, জেলা প্রশাসক মো. সজিদুজ্জামান ও পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে গেছেন। এ সময় তারা গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের সাথে নিয়ে সমন্বিত কাজ চলছে বলে জানান।
KSRM
KSRM
খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূইয়া কোন ধরনের উস্কানির চক্রান্তে বিএনপির কর্মীদের পা না দেওয়া ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের প্রতিরোধ করতেও নেতাকর্মীদের আহবান জানিয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার দোসরা দেশের বিভিন্ন স্থানে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।’ তিনি পাহাড়ি-বাঙালি সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গ্রামে গ্রামে পাহারা বসানোর আহবান জানান।
এর আগে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে খাগড়াছড়ি জেলা সদরে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে এক বাঙালি যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকালে দীঘিনালা সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করলে সেখানে হামলা চালানো হয়। এর জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ফাঁকাগুলি বর্ষণ ও অর্ধ শতাধিক দোকানপাটে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
দীঘিনালা হামলার জেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কে অবস্থান নিয়েছে পাহাড়িরা। রাতে পানছড়িতে সেনাবাহিনীর গাড়ি ও ফায়ার সার্ভিসে হামলার ঘটনা ঘটে। জেলা সদরের নারায়নখাইয়া ও স্বনির্ভর বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে পাহাড়িরা। খাগড়াছড়ি শহরের বিভিন্ন স্থানেও গুলির শব্দ শোনা গেছে। এ অবস্থায় বিভিন্ন সড়কে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছে।
এদিকে সহিংসতার ঘটনায় শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) খাগড়াছড়ি পৌরসদর এলাকায় বেলা ২ টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুজন চন্দ রায়।