মিনহাজুল আয়নান
এবার বিস্ফোরক মামলায় মোতাহের-সামশুলসহ আসামি ১৭১
চট্টগ্রামের পটিয়ায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরীসহ ১৭১ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মামলা দায়ের করেছেন এক ব্যবসায়ী।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) উপজেলার কাশিয়াইশ ইউনিয়নের বুধপুরা এলাকার ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে পটিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করলেও শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাতে বিষয়টি জানাজানি হয়।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে পটিয়া থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, ‘২৯ অক্টোবর রাতে পটিয়া থানায় একটি বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টা মামলা করেছেন এক ব্যবসায়ী। সেই মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরীসহ আরো ১২১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এজাহারে। এছাড়া আরো অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ৪০-৫০ জনকে। ইতোমধ্যে আমরা বেশ কয়েকজন এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছি। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করছে।’
মামলায় হুইপপুত্র নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, হুইপের দুই ছোটভাই ফজলুল হক চৌধুরী মহব্বত, মুজিবুল হক চৌধুরী নবাব সহ ১২১ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করে আরো ৪০ থেকে ৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
বিস্ফোরক ও হত্যাচেষ্টার এ মামলায় অন্য আসামিরা হলেন—পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম সামশুজ্জামান, মোজাম্মেল হক রাজধন, নুরুল হুদা, এমরান, যুবলীগ নেতা সাইফুল হাসান টিটু, মহিম, বাবর, জাবেদ সরওয়ার, কায়ছার, সাদ্দাম, সাইফুজ্জামান মানিক, আব্বাস উদ্দিন ছোটন, ছাত্রলীগ নেতা কপিল উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, পটিয়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর সরওয়ার কামাল রাজিব, গিয়াস উদ্দিন আজাদ, ইঞ্জিনিয়ার রুপক কুমার সেন প্রমুখ।
এছাড়া সাবেক ১৫ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মধ্যে আবুল কাশেম, এহসানুল হক, জাকারিয়া ডালিম, ইনজামুল হক জসিম, মাহবুবুর রহমান, মোহাম্মদ সেলিম, রনবীর ঘোষ টুটুন, সরোজ কান্তি সেন নান্টু, মাহবুবুল হক চৌধুরী, মো. বখতিয়ার, বি এম জসিম, শামসুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন সবুজ, ফৌজুল কবির কুমার, আমিনুল ইসলাম খান টিপু, সাবেক ইউপি সদস্য হাসেম মেম্বারসহ আ: লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে বাদী ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন উল্লেখ করেন, উল্লেখিত আসামিরা দলবদ্ধ সন্ত্রাসী, চাদাঁবাজ, অস্ত্রধারী, ভূমিদস্যু এবং অত্যাচারী প্রকৃতির লোক। আসামিরা উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ সন্ত্রাসী বাহিনী নামে পরিচিত। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতার আসার পর আসামিরা ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে নিরীহ লোকদের নিকট চাদাঁ দাবি, মানুষদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১১ অক্টোবর রাত ৮ টার দিকে ১-৩নং আসামিদের নির্দেশে ৪-১৮ নং আসামিরা যুবদল ও ছাত্রদল নেতাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। এতে বাদী সহ যুবদল নেতা আবুল হাসান, জাফর আহমদ, মো. রাসেল, মো. ফোরকান, সাইফুদ্দিন সহ অনেকেই আহত হয়। ১৯-১২১নং আসামিগণ ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘আর নয় প্রতিরোধ, এবার হবে প্রতিশোধ’ সহ বিভিন্ন উস্কানিমূলক স্লোগান দিতে দিতে এলোপাতাড়িভাবে ককটেল বিস্ফোরণ করলে পুরো এলাকার জনমনে আতংক সৃষ্টি হয়।
এ সময় চট্টগ্রাম পটিয়া কক্সবাজার মহাসড়কের শান্তির হাট এলাকার ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভিকটিম ও সাক্ষীরা বাধা দিলে আসামিরা বাদী ও ভিকটিমদের হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার রড দিয়ে মারধর করে। এ সময় আসামিরা শান্তিরহাটের বিভিন্ন দোকান পাটে ভয় দেখিয়ে দোকান বন্ধের চাপ সৃষ্টি করে এবং নানান ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ প্রাণনাশের হুমকি ধমকি দেয় বলে বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন।
পরবর্তীতে বাদীসহ জখমিরা জখমপ্রাপ্ত অবস্হায় প্রথমে শান্তিরহাট জেনারেল হাসপাতাল ও পটিয়া জেনারেল হাসপাতালেসহ বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।