শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করা ‘সত্যিকার অর্থেই একটি ন্যায়বিচার’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘চসিক নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করে শাহাদাত হোসেন জিতেছিলেন। তবে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্টরা বলপূর্বকভাবে সেই ফলাফল কেড়ে নেয়।’
রবিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র শাহাদাত হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) আদালতের রায়কে মেনে নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণ করিয়েছে। ছাত্র–জনতার যে অভ্যুত্থান সেই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্টদের দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে যেন এই ফ্যাসিস্টরা ফিরে আসতে না পারে, জনগণের যে দুর্বার প্রতিরোধ এই প্রতিরোধ যেন ফ্যাসিবাদকে চিরতরে নির্মূল করে।’
আগামী দিনগুলোতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলেও আশাবাদি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শাহাদাত হোসেনকে মেয়র নির্বাচিত ঘোষণার পর প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগ গত তিনটি নির্বাচন দখল করে নিয়েছে। এখন নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নতুনভাবে সবার অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।’
২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী শাহাদাত ধানের শীষ প্রতীকে পান ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট। সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া আওয়ামী লীগের নগর কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম রেজাউল করিম চৌধুরীকে বিজয়ী ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ওই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক শাহাদাত।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেই মামলার রায়ে গত ১ অক্টোবর শাহাদাতকে মেয়র ঘোষণা করেন চট্টগ্রামের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ খাইরুল আমীন। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম সিটির মেয়র হিসেবে আজ (রবিবার) সকালে তাঁকে সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছেন। একই সঙ্গে কাউন্সিলর না থাকায় করপোরেশন পরিচালনার জন্য ১৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করে দিয়েছেন।