মেয়র হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডা. শাহাদাত হোসেন। রবিবার (৩ নভেম্বর) স্থানীয় সরকার বিভাগের সভাকক্ষে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ তাকে শপথ পড়ান। নির্বাচনের প্রায় সাড়ে তিন বছর পর তিনি মেয়র পদে আসীন হলেন। নানা জল্পনা-কল্পনার পর শেষ পর্যন্ত শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হলেও এখন দাঁড়িয়েছে ‘কতদিনের মেয়র শাহাদাত’ এমন প্রশ্ন।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা হাসান আরিফ বলছেন, আইন অনুযায়ী যতদিন যেটা হবে ততদিন বর্তমান চট্টগ্রাম মেয়র দায়িত্বে থাকবেন।
স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯— এর ৬ ধারায় করপোরেশনের মেয়াদ বলা হয়েছে, প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হবার তারিখ থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর তৎকালীন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী চসিকের প্রথম সভা করেন একই বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি। সে হিসাবে, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ থেকে যাত্রা শুরু করা চসিকের শাহাদাতের শপথের দিন পর্যন্ত কেটেছে ৩ বছর ৮ মাস ১১ দিন। বাকি থাকে ১ বছর ৩ মাস ২০ দিন।
আইনানুযায়ী সাবেক মেয়র রেজাউল-প্রশাসক তোফায়েলের রেখে যাওয়া ‘১ বছর ৩ মাস ২০ দিনে’ মেয়াদ ফুরাতে হবে শাহাদাতকে। তবে সিটি করপোরেশন নির্বাচন আইন অনুযায়ী, কোনো সিটি করপোরেশনে নির্বাচনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ করতে হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ছাত্র-জনতার দাবির মুখে নির্বাচন কমিশনসহ সব খাতে সংস্কার করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ধারণা করা হচ্ছে, সংস্কার পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরেই স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হবে। সে হিসেবে ডা. শাহাদাত হোসেন আরো কিছু সময় পেতে পারেন, যদিনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচন পূর্ববর্তী প্রশাসক নিয়োগ না করে।
নতুন মেয়রের মেয়াদকাল হবে আরেকটি নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত —এমনটি জানিয়ে সিনিয়র আইনজীবী মফিজুল হক ভূঁইয়া সিভয়েস২৪’কে বলেন, ‘আজ তিনি শপথ পাঠ করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী, শপথের মাধ্যমে আজ থেকে তিনি চসিকের মেয়র। তাই আজ থেকে নির্বাচন ঘোষণার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত চসিকের যত দায়িত্ব রয়েছে, সবই উনি পালন করবেন।’
ভোট কারচুপির অভিযোগে করা নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের মামলায় মেয়রের চেয়ার ফিরে পান নগর বিএনপির এ নেতা। গত ১ অক্টোবর ডা. শাহাদাত হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করে ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ খাইরুল আমীনের আদালত। পরে ৮ অক্টোবর অপসারিত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর স্থলে ডা. শাহাদাত হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করে সংশোধনী গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এরপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে শপথ অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়া হয়।