নগরের ওষুধ ও স্বর্ণের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার হাজারি গলির সিলগালা করে দেওয়া কয়েকশ দোকান খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও আতঙ্ক কাটেনি স্থানীয়দের মনে।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সকাল থেকে যৌথবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে একে একে দোকানে লাগানো সিলগালা খুলে নেওয়া হয়। ওই সময় দোকানি আর ব্যবসায়ী সমিতির নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দোকানগুলো খুলে দেওয়ায় তাদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। বেচাকেনায় গত দুদিন ভাটা পড়লেও দুপুরের পর থেকে তা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। হাজারি গলিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলায় ঘটনায় যারা প্রকৃত দোষী কেবল তাদেরই শাস্তি চান তারা।
যৌথ বাহিনীর পক্ষে টাস্কফোর্স-৪-এর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ‘নির্দিষ্ট সংগঠনের বিরুদ্ধে যে সংশ্লিষ্টতা এটি আসলে এত দ্রুত বলাটা দুষ্কর। আমরা খতিয়ে দেখছি, এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনো সংগঠনের সংশ্লিষ্টতা পাইনি। আমরা এখনো শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ায় আছি। শনাক্তকরণের পরই এর ভেতরে কে বা কারা ছিলেন তা বলা সম্ভব হবে।’
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী একটি ফটোকার্ড শেয়ার করেন। সেখানে ইসকন নিয়ে ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য ছিল। ফটোকার্ড সম্বলিত সেই পোস্ট মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করেন হাজারী গলির মিয়া শপিং সেন্টারের মোল্লা স্টোর নামে দোকানের মালিক ওসমান গণি। আর সেই পোস্টে ক্ষুব্ধ হয়ে একইদিন বিকেল ৪টার দিকে স্থানীয়দের একাংশ সেই দোকান ভাঙচুর করে এবং ওই ব্যবসায়ীর ওপর আক্রমণ চালায়।
তাকে অবরুদ্ধ করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এ সময় বিক্ষুব্ধরা পোস্টদাতা ওই ব্যক্তিকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করেন। কিন্তু পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হেফাজতে নিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর চড়াও হয় বিক্ষুব্ধরা। এরপর তারা পুলিশ ও সেনাসদস্যদের ওপর ‘এসিড’ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে হামলাকারী দুর্বৃত্তরা সংঘর্ষে জড়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে। এতে পুলিশের ৭ এবং সেনাবাহিনীর ৫ জন সদস্য আহত হন। যার মধ্যে একাধিকজন এসিডদগ্ধ হন। এরপরই জড়িতদের গ্রেপ্তারে ওইদিন রাত আনুমানিক ১১টা পর্যন্ত অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বুধবার রাত পর্যন্ত এ ঘটনায় ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।