শাহাদাত হোসেন।
গোলাম আজম-সাঈদীর চিন্তার ফসল আইআইইউসি
কোনো ব্যক্তির চিন্তা-চেতনার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির সাবেক হুইপ শাহাজাহান চৌধুরী। বুধবার (১৪ নভেম্বর) এক সভায় ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের (ইসকস) প্রতিষ্ঠার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। ২৭ জানুয়ারি থেকে প্যারেড মাঠে শুরু হতে যাওয়া ঐতিহাসিক তাফসির কোরআন মাহফিলের এন্তেজামিয়া কমিটি এ প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে।
সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘এই ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের চিন্ত-চেতনার ভিত্তি কোনো ব্যক্তির নয়। একমাত্র হযরত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (রহ.) এবং মরহুম অধ্যাপক গোলাম আজম (রহ.) এর চিন্তার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। শাহ ওয়ালি উল্লাহ ইনিস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আল জাবের ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আন্তর্জাতিক মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটার পেছনে বায়তুশ শরফের পীর মরহুম আব্দুল জব্বার(রহ.), সৈয়দ আব্দুল আহাদ মাদানী (রহ.), প্রথম বৈঠকে তাঁরাই উপস্থিত ছিলেন। এদের চোখের পানির বদৌলতে আজকে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় দাঁড়িয়ে আছে। হযরত শামসুদ্দীন (রহ.) সাহেবের মাধ্যমে ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। পরবর্তীতে চট্টগ্রামের বিশিষ্টদ্বীন মরহুম মাওলানা তাহের সাহেবও যুক্ত হয়েছেন’
কলেজিয়েট মাঠ থেকে শুরু তাফসির মাহফিলের স্মৃতিচারণ করে নগর জামায়াতের আমির বলেন, ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে ১৯৭৯ সালে চট্টগ্রামে তাফসির মাহফিল যাত্রা শুরু হয়। চট্টগ্রামে কি হয়েছিল আপনারা জানেন। স্কুল ও কলেজে কুরআনের দাওয়াত যখন পৌঁছে যাচ্ছে তখন বিভিন্ন রাজনৈতিকদল এ মাহফিল বন্ধ করার জন্য যে উঠে পড়ে লেগেছিল। তাওহিদী জনতার বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণে কলেজিয়েট স্কুল থেকে আমরা বাধ্য হয়ে প্যারেড ময়দানে তাফসিরুল কোরআন মাহফিল করি। কলেজিয়েট স্কুল মাঠে যেদিন তাফসির মাহফিল বন্ধ হয়েছিল সেদিন সারা চট্টগ্রামের টেকনাফ থেকে ফেনী পর্যন্ত এই তাফসির মাহফিল বন্ধের যে প্রতিবাদ করেছিল তৎকালীন রাজনৈতিক সংগঠন পর্যন্ত ঘরের ভেতর লুকিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। আর যেদিন প্যারেড ময়দানে তাফসির মাহফিল শুরু হলো সেদিন কলেজিয়েট স্কুল মাঠের চেয়েও দুই গুণ জনতা উপস্থিত হয়েছিল। আজ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (রহ.) আমাদের মাঝে নেই। আমাদেরকে একটা জিনিস চিন্তা করতে হবে।
ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, প্যারেড ময়দানের ঐতিহাসিক তাফসিরুল মাহফিল থেকে দীর্ঘদিন মাহরুম হয়েছি। আজকে আমাদের মন ভরে গেছে। এই তাফসিরুল কোরআন মাহফিল হযরত মাওলানা মরহুম শামসুদ্দীন (রহ.) যিনি প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন ও সমাজসেবক হিসেবে ভূমিকা পালন করেছিলেন। শুধুমাত্র এই বৃহত্তর চট্টগ্রাম নয় এই তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের মাধ্যমে এই চট্টগ্রামকে কোরআনের প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষেত্রে সারা দুনিয়ার কাছে পরিচিত করেছিলেন।
KSRM
KSRM
ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ তাহেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এন্তেজামিয়ার কমিটির সভায় বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আমিরুজ্জামান, লেখক ও সাহিত্যিক ড. আ জ ম ওবায়দুল্লাহ, পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি ড. আবু বকর রফিক আহমদ, পরিষদের সহ-সভাপতি ডা. এ কে এম ফজলুল হক ও ইঞ্জিনিয়ার মোমিনুল হক, পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ আনোয়ার হোসাইন, ছাত্রনেতা ফখরুল ইসলাম ও মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম।
মাহফিলের বাজেট পেশ করেন ডা. মুহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান। ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের সহ-সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, শফিউল আলম ছুবহানী ও সাংগঠনিক সম্পাদক সলীমুল্লাহ জামানের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এন্তেজামিয়া কমিটির সদস্য মুহাম্মদ উল্লাহ, এফ এম ইউনুস, মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, পরিষদ সহ-সভাপতি ডাক্তার মুহাম্মদ ঈসমাইল, মাওলানা মমতাজুর রহমান, মাওলানা মামুনুর রশীদ নূরী, অধ্যক্ষ মাওলানা জাকের হোসাইন, ডাক্তার আব্দুল মোতালেব, ডক্টর আবুল কালাম আযাদ, ডা মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম
প্রমুখ।