শাফায়েত হোসেন।
যানজট নিরসনে টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা চসিক মেয়রের
চট্টগ্রাম নগরকে যানজটমুক্ত করতে একাধিক স্থানে বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে বাস, মিনিবাস, হিউম্যানহলার অটোটেম্পেু সিএনজি, বেবী টেক্সি মালিক-চালক ঐক্য পরিষদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান।
অব্যবহৃত এবং বেদখল হওয়া ভূমিতে টার্মিনাল করার কথা জানিয়ে চসিক মেয়র বলেন, ‘আমি যানজটমুক্ত চট্টগ্রাম গড়তে চাই। এজন্য নগরের বিভিন্ন প্রবেশমুখ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে একাধিক টার্মিনাল প্রয়োজন। এজন্য প্রয়োজনে সিটি গেট, অক্সিজেন, কালুরঘাট, পতেঙ্গাসহ প্রয়োজনীয় এলাকাগুলোতে জেলা প্রশাসন, রেলওয়ে, গণপূর্ত, রোডস এন্ড হাইওয়ে, চা বোর্ডসহ যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠানের অব্যবহৃত বা বেদখলকৃত যে ভূমি আছে সেগুলোতে টার্মিনাল করার জন্য পদক্ষেপ নিব। কয়েকটা স্পট আমরা দেখেছি। ইঞ্জিনিয়াররা ভিজিট করছে বিভিন্ন এলাকা। ট্রাফিক বিভাগের সাথে আমরা বসবো। বিশেষ করে এডিশনাল কমিশনার ট্রাফিক এবং ডিসি ট্রাফিক চারজন, টোটাল পাঁচজন নিয়ে আমরা বসার একটা পরিকল্পনা আছে। নগরীকে যানজটমুক্ত রাখার বিষয়ে তাদের মতামত নিব।’
সচেতনতার উপর জোর দিয়ে মেয়র বলেন, ‘নগরকে যানজটমুক্ত রাখতে আমাদের যে জিনিসটি সবচেয়ে বড় দরকার সেটি হচ্ছে ডিসিপ্লিন (শৃঙ্খলা)। গাড়িগুলো যত্রতত্র না দাঁড়িয়ে আমাদের যে যাত্রী ছাউনি অথবা বাস স্টপেজ থাকবে সেখানে তারা যাতে দাঁড়ায়। এই জিনিসটা যদি হয় অন্ততপক্ষে একটা ডিসিপ্লিনে চলে আসবে। যানজট হয় মূলত যখন সুনির্দিষ্ট বাস স্টপে-স্টপে না দাঁড়িয়ে যত্রতত্র দাঁড়িয়ে প্যাসেঞ্জার নিবে তখনই। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। প্রতিটি জায়গায় সচেতনতার উপরে আর কোন কিছুই নেই। সবাইকে সচেতন করতে হবে; সেটা ময়লা পরিস্কার থেকে শুরু করে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সব বিষয়ে।’
চালকদের সুস্থতা সবচেয়ে বেশি জরুরি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চালকরা যাতে জোড়ে গাড়ি না চালায়। অনেকে হয়তোবা মদ্যপান করে চালায় তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। অনেক চালকের অসুস্থতা থাকে; তারা লুকিয়ে রাখে যে তাদের রোগ আছে। এ বিষয়গুলো সতর্কতার সাথে দেখতে হবে। কারণ শুধু গাড়ি চালালেই হবে না; প্যাসেঞ্জারের সেফটি ইম্পর্টেন্ট এবং নিজের (চালক) সেফটি অলসো ইম্পর্টেন্ট।’
এ সভায় চট্টগ্রাম নগর বাস, মিনিবাস, হিউম্যানহলার অটোটেম্পেু সিএনজি, বেবী টেক্সি মালিক-চালক ঐক্য পরিষদ বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো মধ্যে রয়েছে— ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করা, ব্যাটারিচালিত রিকশা চার্জ দেয়ার জন্য অবৈধ বিদ্যুতের লাইন সরবরাহ বন্ধ করা, নগরের বাইরে থেকে আসা বাস-ট্রাক টার্মিনালে না গিয়ে শহরের মধ্যে এসে যানজট তৈরি করছে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া, গাড়ির ওপর ট্রাফিক বিভাগের হয়রানিমূলক মামলা বন্ধ করা এবং জরিমানার হার ঢাকার সাথে সমন্বয় করা, যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যানজট তৈরি না করে গাড়ির রুটের শুরুর পয়েন্ট এবং শেষ পয়েন্টে কাগজপত্র চেক করা, ট্রাফিক বিভাগের অসাধু সার্জেন্ট-টিআইসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে রুট পারমিট ছাড়া গাড়ি চালানো এবং গ্রাম সিএনজিচালিত গাড়ি চলাচল বন্ধ করা, পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি বন্ধ করা এবং পর্যাপ্ত পার্কিং চালু করা।
এ সভায় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী মারুফসহ ১৫টি সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে গঠিত এ পরিষদের পক্ষে সংগঠনের আহ্বায়ক জাফর আহম্মদ, সদস্য সচিব মো. নজরুল ইসলাম, সদস্য সাবেক কাউন্সিলর মো. নাজিম উদ্দিনসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।