তিন বছরের কন্যাশিশু তাসকিয়া। দুনিয়ার অনেক কিছু তার এখনো অজানা। বাবার ভালোবাসা কী— বুঝে উঠার আগেই হারিয়ে ফেললো বাবাকে। আজ থেকে আর কখনো দেখতে পাবে না বাবাকে, হবে না বাবা-মেয়ের আলিঙ্গনও। চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ইসরাত জাহান তারিন। দেখা হলো না অনাগত সন্তানের মুখও। তার আগেই চাপাতির কোপে না ফেরার দেশে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে নগরের লালদিঘী এলাকায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে সংঘর্ষের ঘটনায় চাপাতির এলোপাথাড়ি নিহত হন তিনি।
আলিফের পরিবার থাকেন চট্টগ্রাামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদে। তিনি চট্টগ্রামে থাকতেন ব্যাচেলর হিসেবে। সম্প্রতি আলিফ চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর নিযুক্ত হয়েছিলেন।
‘আম্মু মামাতো আর নেই’
সাত ভাইবোনের মধ্যে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ চতুর্থ। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন বড় বোন জান্নাত আরা বেগম। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আসরের সময় খবর দিয়েছে একজন সাইফুলের যেন কি হয়েছে। আমার মেয়েটা মেডিকেলে পড়ে। আমি ওকে ফোন দিয়ে বলি যে— তোমার মামার কি হইছে একটু দেখতে যাও তো। পরে মেয়ে আমাকে বলে যে মা মামা তো আর নেই। হাসপাতালে ছুটে এসে দেখি আমার আদরের ভাইটা আর নেই।’
জান্নাত আরা বেগম আরো বলেন, ‘ওর তিন বছরের একটা মেয়ে আছে। আরেকটা সামনে হবে। ওর বউ চার মাসের গর্ভবতী। ও এখানে একা থাকতো। এই বাচ্চা মেয়েটার কি হবে। আমার পরিবার তো শেষ হয়ে গেলো। কারা মারলো আমার ভাইকে। আমরা এর বিচার চাই। বাড়ি থেকে সবাই রওনা দিয়েছে। এখনো কেউ এসে পৌঁছায় নাই। আমরা সবার জন্য অপেক্ষা করছি।’