চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে বহনকারী প্রিজনভ্যান আটকে বিক্ষোভের সময় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের সদস্যদের (ইসকন) সহায়তা করার অভিযোগে চট্টগ্রাম আদালতের ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশনের অফিসের (মুন্সি সমিতি) নথিপত্রে আগুন দিয়েছেন আইনজীবীদের একাংশ।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতের প্রবেশমুখে ভূমি অধিগ্রহণ শাখার উল্টোপাশে ওই সমিতির অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বিক্ষুব্ধ আইনজীবীদের অভিযোগ—মঙ্গলবার চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুরের পর ইসকন সদস্যরা তাকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান আটকে বিক্ষোভ করেন। এ সময় মুন্সি সমিতির সদস্যরা নিজেদের পোশাক এবং খাবার পানি বিক্ষোভকারীদের সরবরাহ করেছেন। এছাড়া তারা উস্কানিমূলক বিভিন্ন পোস্টও দিয়েছেন ফেসবুকে।
ফিরোজুল ইসলাম তালুকদার নামে এক বিক্ষুব্ধ আইনজীবী সিভয়েস২৪’কে বলেন, ‘এখান থেকে গতকাল মুন্সির পোশাক পড়ে গিয়ে ইসকনকে সাপোর্ট করা হয়েছে। তারা আইনজীবীদের অংশ। তারাতো এটা করতে পারে না। সাধারণ আইনজীবীরা এই নিয়ে ক্ষুব্ধ।’
KSRM
KSRM
তিনি আরও বলেন, ‘মুন্সিখানার নাম দিয়ে এখানে সকল অপকর্ম করা হয়। প্রায় ১৮শ’ চেম্বার আছে আদালতে। তারা চেম্বারে না গিয়ে এখানে বসে থাকে। সকালে তাদেরকে ফোন করে স্যার বলে বলে চেম্বারে নিতে হয়। আমরা চেম্বারে যাই ৯টায়, তারা সাহেবের মতো ১০টা বা ১২টার দিকে আসে।’
চট্টগ্রাম আদালতের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মুন্সি বলেন, ‘আইনজীবীরা আমাদের সমিতির কাগজপত্র জ্বালিয়ে দিয়েছে। আমাদের সমিতির কিছু সনাতনী ভাই গতকাল ইসকনের পক্ষে পোস্ট দিয়েছিল। এ নিয়ে আমাদের মুসলিম আইনজীবীরা ক্ষুব্ধ হয়েছে। আজ হত্যার শিকার আইনজীবী আলিফ ভাইয়ের জানাজার পর উত্তেজিত আইনজীবীরা ক্লার্ক সমিতিতে আগুন দেয়।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম আদালতের মুন্সি সমিতির সাধারণ সম্পাদক রিপন কান্তি নাথ সিভয়েস২৪’কে বলেন, ‘আমাদের নথি, ব্যাংকের স্টেটমেন্ট, ডিপিএসের কাগজপত্র, সমিতির সদস্যদের হিসাবের বই আলমারি ভেঙে বের করে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের সমিতিতে গতকাল কোনো বহিরাগত ঢোকেনি। আমাদের সংগঠনে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান—সবাই আছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও গতকাল আমি উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু আমি গতকালের কোনোকিছুর সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম না। এখন আমরা চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাথে বৈঠক করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।’
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক চট্টলার কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি আলিফের জানাজা শেষে মরদেহ নিয়ে তার গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছি। মুন্সি সমিতিতে আগুন দেওয়ার বিষয়টি আমার নলেজে নেই। আপনারা সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখুন।’