হঠাৎ করে বেড়ে গেছে চোখ ওঠা রোগী রোগীর সংখ্যা। ছোঁয়াচে হওয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে রোগটি। ফলে দৈনন্দিন কাজের সময় সংক্রমণজনিত ছোঁয়াচে এই রোগ থেকে বাঁচতে ভিড় বেড়েছে চশমার দোকানে। চোখ ওঠায় আক্রান্ত কারও চোখের দিকে তাকালে চোখ ওঠে সাধারণ মানুষের এমন ভ্রান্ত ধারণা ভিড় জমিয়েছে দোকানে দোকানে।
যদিও চিকিৎসকরা বলছেন, আক্রান্ত রোগীর চোখের দিকে তাকালে চোখ উঠে না। ওই রোগীর চোখের পানিতে ভাইরাস ভেসে বেড়ায়। যখন এই পানি মুছতে যায়, তখনই এটি রোগীর হাতে এসে যায়। এরপর থেকেই সেই হাত দিয়েই যা কিছুই ছুঁক না কেন, সেখানে ভাইরাস চলে আসে। এতে করে চশমা ব্যবহারের ফলে চোখে স্পর্শ করা কমবে এবং ধুলাবালু, ধোঁয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টম্বর) নগরের নিউমার্কেট, তামাকুমন্ডি লেইন, জামালখান ঘুরে দেখা গেছে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বিক্রি বেড়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে ফুটপাতের দোকানগুলোতে। ক্রেতার চাপকে পুঁজি করে বেড়ে গেছে দামও। অন্যান্য সময় যেখানে ৫০ থেকে ১০০ টাকায় চশমা মিলতো এখন সেখানে গুনতে হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা।
তামাকুমন্ডি লেইনের ফুটপাতে বসে গত ছয় দিনে ১২ হাজার টাকার চশমা বিক্রি করেছেন সাইফুল আজম। তিনি বলেন, গত ছয়দিনে রোজার ঈদের মতো ব্যবসা হয়েছে। চোখ উঠা রোগ বেড়ে গেছে। গত কয়েকদিনের ব্যবধানে আমি নিজেও আক্রান্ত হয়েছি।
অন্যদিকে অফিসে যাওয়ার পথে জামালখানে চশমার দোকানে যান প্রাইম ব্যাংকের কর্মকর্তা সারাফাত উল্লাহ্ সিরাজি। ছোঁয়াচে রোগের কারণে দপ্তর থেকে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে তাকে। তিনি বলেন, প্রতিদিন হাজার খানের মানুষের সাথে টাকা লেনদেন হয়। এই অবস্থায় সাবধানতার কোন বিকল্প নেই।
জামালখান এলাকার নব অপটিক্সের মালিক রিফাত হোসেন সিভয়েসকে বলেন, তুলনামূলক সাদা গ্লাসের চশমা থেকে কালো বা রঙিন চশমার দাম বেশি। আমদানি করতে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে আমাদের।
চোখ উঠলে চশমা ব্যবহারের বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের প্রধান তনুজা তানজিন চট্টলার কণ্ঠকে বলেন, চোখ উঠা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বেশ বড় ভ্রান্ত ধারণা আছে। রোগীর চোখে তাকালে এই রোগ কখনো ছড়ায় না। উল্টো সংক্রমিত রোগীর চশমা, টিস্যু বা কাপড় ব্যবহার করলে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও কালো চশমা পরলে রোদের কারণে চুলকানি, অস্বস্তি, ব্যথা থেকে কিছু উপশম পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, আক্রান্ত রোগীদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। চোখে পানি দিতে হবে বারবার। এছাড়াও ব্যথা থাকলে প্যারাসিটামল খেতে হবে। অবশ্যই ডাক্তার দেখিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করতে হবে। তবে কোনোভাবে রাস্তাঘাট বা বাড়ির পাশের ফার্মেসি থেকে এক্সট্রা ড্রপ কিনে ব্যবহার করা উচিত নয়।